খোকন কুমার রায়:
“করোনার কাজ করোনা করছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে হায়, তাই বলে কি ঘরে বসে থাকা, আমাদের শোভা পায়!!” – আমরা মনে হয় এমনটাই ভাবছি। গত ৫ এপ্রিল গার্মেন্টস শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে লিখেছিলাম “যা হবার হয়ে গেছে আরো কিছু বাকি আছে!” (লিংক:https://daily dhumketu.com/article/3478/index.html)। আর এখন কী কী হবার বাকি ছিল তাই আমরা দেখছি, হয়তো সামনে আরো দেখবো।
বিশ্বের ইতিহাসে ভয়াবহ সংক্রামক ও প্রাণঘাতী ভাইরাস মনে হয় এটাই। আমরাও যেমন আধুনিক হয়ে গেছি, ভাইরাসগুলিও মনে হয় আমাদেরর মতোই আধুনিক হয়ে গেছে। আমরা যেমন পোশাক-পরিচ্ছদ ও রূপ পাল্টাচ্ছি, ভাইরাসটিও সে রকমটাই করছে, এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাচ্ছে আর এক-এক রকম রূপ নিচ্ছে। বোধ করি অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশেই বহুরূপ ধারণ করছে। আমরা মানুষগুলি যেমন বহুরূপী, এখানে এসে ভাইরাসটিও বহুরূপী হয়ে গেছে।
কারণ, হয়তো ভাইরাসটি জেনে গেছে এখানে গবেষক, বিজ্ঞানী প্রভৃতি ব্যক্তিবর্গ নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন এবং তার রূপ উন্মোচনের জন্য কেউ নেই। কাজেই, সে এখানে যেমন খুশি তেমন সাজতে পারে।
আর আমাদের উৎসাহী মানুষ ও গার্মেন্টস মালিকরা তো রয়েছেনই, বহুরূপী ভাইরাসটির বাসস্থান পাকাপোক্ত করার জন্য। সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও আন্তর্জাতিক করুণ অবস্থা সত্ত্বেও অসংখ্য মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে। সরকারি বাহিনী ও সংস্থাগুলো ভাইরাসের বিরুদ্ধে কী যুদ্ধ করবে, তারা ইতিমধ্যেই অনেকেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মানুষগুলোকে ঘরে রাখার যুদ্ধেই নাস্তানাবুদ অবস্থা। আবার কোথাও কোথাও অবাধ যাতায়াতে বাধা দিতে গিয়ে তারা হামলারও শিকার হয়েছেন।
যাহোক, এখন শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই আমাদের ভরসা এবং এ ক্ষেত্রে হয়তো যোগ্যরাই টিকে থাকবে। বর্তমানে মনে হচ্ছে, বাংলার মানুষ নিম্নলিখিত বিপর্যয়কর স্লোগান দিয়ে অবাধে চলাফেরা করছে এবং ব্যাপকভাবে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটাচ্ছে-
“লকডাউন ভাঙ্গব
করোনাকে আনব!
হাতী ঘোড়া গেল তল
আমরা বলি কত জল!”
চলুন সবাই মিলে অপ্রয়োজনে যাতায়াত বন্ধ করি, করোনা সংক্রমণ রোধ করি, ঘরে থাকি, সুস্থ থাকি এবং অপরকেও সুস্থ রাখি।
শুভ কামনা।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, ধূমকেতু.কম।