চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪ লাখ ২২ হাজার। যুক্তরাষ্ট্রেই ফের এই সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় এক লাখে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে দৈনিক মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২২ কোটি ৬০ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪৬ লাখ ৫১ হাজার।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ হাজার ৬৮৮ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৮০০। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪৬ লাখ ৫১ হাজার ৬২১ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ২২ হাজার ৯৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ কোটি ৬০ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৯ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৪৯২ জন এবং মারা গেছেন ৭৭৪ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৭০৪ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন ৭১৯ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজার ১৭৮ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৭১ লাখ ৫৮ হাজার ২৪৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৬৮ জনের।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৫৬ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৬৪৫ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ১০ লাখ ৬ হাজার ৪২৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫ লাখ ৮৭ হাজার ১৩৮ জনের।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৪০ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৪৭৯ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৩২ লাখ ৮৮ হাজার ২১ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৪৩ হাজার ২৪৭ জন।
প্রাণহানির তালিকায় ওপরের দিকেই রয়েছে মেক্সিকোর নাম। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন ২২৪ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৫ হাজার ১৩৯ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩৫ লাখ ১১ হাজার ৮৮২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৭৪৮ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৭৬ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫৭৭ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪১ লাখ ৭০ হাজার ৮৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৮৮ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় ইরানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৪৮ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৫৪১ জন। করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫৩ লাখ ১৮ হাজার ৩২৭ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৫৯ জন মারা গেছেন।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে ৬৯ লাখ ৭ হাজার ১৩৩ জন, যুক্তরাজ্যে ৭২ লাখ ৫৬ হাজার ৫৫৯ জন, ইতালিতে ৪৬ লাখ ৯ হাজার ২০৫ জন, তুরস্কে ৬৬ লাখ ৮২ হাজার ৮৬৪ জন, স্পেনে ৪৯ লাখ ১৫ হাজার ২৬৫ জন এবং জার্মানিতে ৪০ লাখ ৯৫ হাজার ৩৭১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১৫ হাজার ৬০৩ জন, যুক্তরাজ্যে ১ লাখ ৩৪ হাজার ২৬১ জন, ইতালিতে এক লাখ ২৯ হাজার ৯৫৫ জন, তুরস্কে ৬০ হাজার ১১৭ জন, স্পেনে ৮৫ হাজার ৩৯৩ জন এবং জার্মানিতে ৯৩ হাজার ২৫০ জন মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
/জেড এইচ