নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: করোনাভাইরাসের মহামারির আকস্মিকতায় সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে গিয়েছিলেন অনেক দম্পতি। মা ও সন্তানের সুস্থতা এবং নিরাপদ প্রসবের কথা চিন্তা করে চিকিৎসকেরাও এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছিলেন। এভাবেই প্রায় দেড় বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু মহামারি শেষ হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যদিও আশার আলো হয়ে এসেছে টিকা।
তারপরও করোনা মহামারির মধ্যে যাঁরা সন্তান নেবেন বলে পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের একটু বেশি সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে—
● সন্তানধারণের পরিকল্পনার শুরু থেকেই ফলিক অ্যাসিড খেতে শুরু করুন। এটা তিন মাস আগে থেকে শুরু করে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস পর্যন্ত খেতে হবে।
● সন্তান নেওয়ার আগে ডায়াবেটিস ও থাইরয়েড স্ক্রিনিং করে নেওয়া ভালো। স্থূলতা ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন।
● দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগ থাকলে বা কোনো ওষুধ সেবন করলে সে বিষয়ে আগেই নিজ নিজ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে।
● রুবেলা ও হেপাটাইটিস বি-এর টিকা গর্ভধারণের আগেই নিয়ে নিন।
● অন্তঃসত্ত্বা ও বুকের দুধ দেওয়া মায়েদের করোনার টিকা দেওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ গঠিত জাতীয় টিকা পরামর্শক কমিটি। এ ব্যাপারে শিগগির সরকারের সিদ্ধান্ত চলে আসবে। সরকারের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হলে যত দ্রুত সম্ভব টিকা নিয়ে নিতে হবে।
● যাঁরা আইভিএফ চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাঁরা চিকিৎসা শুরুর আগেই করোনার দুই ডোজ টিকা নিন। যাঁদের সময়ের স্বল্পতা আছে (যেমন ক্যানসার চিকিৎসা শুরু করবেন, ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণুর সংখ্যা কম, অ্যাডভান্সড অ্যান্ডোমেট্রিওসিসে ভুগছেন, স্বামী স্বল্প সময়ের জন্য দেশে এসেছেন ইত্যাদি), তাঁরা আইভিএফ চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করে ভ্রূণ হিমায়িত করে রাখতে পারেন। এরপর টিকার দুই ডোজ নিয়ে হিমায়িত ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করতে পারেন।
● গর্ভধারণের পরিকল্পনা করলে যথাসম্ভব নিজেকে সবার থেকে আলাদা (আইসোলেশন) রাখার পরিকল্পনা করুন। যাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে কাজ করেন (যেমন করোনা সংক্রমিত রোগীর চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িত, জনসমাগমে যেতে হয় এমন নারী), তাঁরা আগেই অপেক্ষাকৃত নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও নতুন শিশুর জন্ম হবে। তবে প্রতিটি গর্ভধারণকে সর্বোচ্চ নিরাপদ রাখার চেষ্টা করতে হবে সবাইকে। করোনার সংক্রমণ যেন কোনো মা ও তাঁর গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে আমাদের সবার নজর রাখতে হবে।