শিক্ষা ও সাহিত্য

কম সময় স্কুলে থাকবে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সশরীর ক্লাস আপাতত খুব কম হবে। যেদিন যে শ্রেণির শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাবে, সেদিন তাদের দুটি করে ক্লাস হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছাড়া অন্যদের জন্য অনলাইনে ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম চলবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) মো. বেলাল হোসাইন বলেন, খোলার পর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের যেহেতু সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস হবে, তাই তাদের অ্যাসাইনমেন্ট ও অনলাইনে ক্লাস হবে না। তবে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির সশরীর ক্লাস সপ্তাহে এক দিন হওয়ায় তাদের অ্যাসাইনমেন্ট ও অনলাইন ক্লাস চলবে।

পঞ্চম শ্রেণিসহ প্রাথমিক পর্যায়ের অন্যান্য শ্রেণির বাড়ির কাজও (ওয়ার্কশিট) চলবে। বুধবার থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয় বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজধানীর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ক্লাসের সময়সূচি প্রণয়নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি। এই নির্দেশনার মাধ্যমে কীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলবে, তার একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা পেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বুধবার দুপুরের দিকে মাউশি এই নির্দেশনা দেয়। এরপর নির্দেশনা অনুযায়ী ক্লাসের সময়সূচি ঠিক করার কাজ শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। প্রায় দেড় বছর পর আগামী রোববার থেকে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীর ক্লাস শুরু হবে। শিক্ষাবিদেরা মনে করছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য তাঁরা ঘাটতি পূরণের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে বলছেন।

ক্লাসের সময়সূচি সাজাতে ১১ দফা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত হয় ৫ সেপ্টেম্বর। যদিও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না পাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সময়সূচি নির্ধারণসহ অন্যান্য কাজ করতে পারছিল না। এ অবস্থায় বুধবার মাউশি ১১ দফা নির্দেশনা দেয়।

নির্দেশনায় বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর প্রতিদিন নির্দিষ্ট শ্রেণিতে দুটি করে ক্লাস হবে। ফলে শিক্ষার্থীদের আগের মতো দীর্ঘ সময় স্কুলে থাকতে হবে না। করোনাকালের আগে মাধ্যমিক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে ছয় ঘণ্টার মতো স্কুলে থাকতে হতো। সরকারের কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) মোকাবিলাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি পরামর্শ দিয়েছিল যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিকে শিক্ষার্থীদের কম সময় স্কুলে রাখতে হবে, যাতে স্কুলে খেতে না হয়, মাস্ক খোলার প্রয়োজন না হয়।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাবে। আর প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে এক দিন ক্লাসে যেতে হবে। সময়সূচির সঙ্গে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্যবহারিক ক্লাসগুলোও নির্ধারণ করা যেতে পারে।

সময়সূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে মাউশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ, প্রস্থান বা অবস্থানের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে বলেছে। তারা বলছে, সময়সূচি এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে, যেন বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে ও বের হয়। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপাতত প্রাতঃসমাবেশ (অ্যাসেম্বলি) বন্ধ থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাসের সময়সূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে এসব বিষয় মেনে চলতে হবে।

‘শুরুতেই পড়াশোনার চাপ নয়’

শিক্ষার্থীরা দেড় বছর পরে শ্রেণিকক্ষের ক্লাসে ফিরছে। অনেকের মধ্যে করোনা নিয়ে আতঙ্ক থাকতে পারে। অনেকের মধ্যে ক্লাসে ফেরা নিয়ে সংকোচ তৈরি হতে পারে। শিক্ষাবিদেরা বলছেন, শিশুদের আগে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। শুরুতেই পড়াশোনার চাপ দেয়া যাবেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *