নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: দেশের আলোচিত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার পলাতক আসামি কনস্টেবল সাগর দেব অবশেষে আত্মসমর্পণ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানিয়েছেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম। আত্মসমর্পণের সাথে জামিন আবেদনও করেন সাগর দেবের আইনজীবী দীলিপ দাশ। জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
আত্মসমর্পণ করা কনস্টেবল সাগর দেব সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের অন্যতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘ সাত মাস চট্টগ্রাম কারাগারে থাকা ওসি প্রদীপকে ১০ জুন কক্সবাজার কারাগারে স্থানান্তর করার ১৪ দিনের মাথায় সাগর দেব আত্মগোপন থেকে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।
গত ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশিকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাখেদ খান। এ ঘটনায় গত ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ (পরিদর্শক) লিয়াকত আলীকে প্রধান করে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটির তদন্ত করার আদেশ দেন র্যাবকে। এরপর গত ৬ আগস্ট প্রধান আসামি লিয়াকত আলী ও প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
পরবর্তীতে সিনহা হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে পুলিশের করা মামলার ৩ জন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ ছাড়া একই অভিযোগে পরে গ্রেফতার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক সদস্য কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও।
মামলায় গ্রেফতার ১৪ আসামিকে র্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের মধ্যে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
উক্ত মামলায় গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম। কিন্তু মামলায় অভিযুক্ত ওসি প্রদীপের অন্যতম সহযোগী কনস্টেবল সাগর দেব পলাতক হয়ে যান।