নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধের পর এ মাসে খুলে যাচ্ছে দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এ জন্য জোরেশোরে চলছে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম। অন্তত একটি টিকা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। অক্টোবরের মধ্যে অন্তত পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে জানা যায়, দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে মোট ৫১টি। এর মধ্যে ৪টিতে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। বাকিগুলোর মধ্যে ৩৯টিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী পড়ানো হয় (ইন-ক্যাম্পাস)। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী প্রায় তিন লাখ। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত কলেজ, মাদরাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। আর পাঁচটি আছে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় এ মাসে খুলছে। আর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) চারটিতে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলছে মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর)। এর পর এসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষাসহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরই মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীর প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে ২০ অক্টোবর। তার আগে খোলা হবে আবাসিক হল। আর ১৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন চালু হবে। গত মাস পর্যন্ত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ শতাংশের অধিক শিক্ষার্থীর টিকা দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলগুলো খুলবে ১৭ অক্টোবর এবং ২০ অক্টোবর সশরীর ক্লাস শুরু হবে। ২১ অক্টোবর খুলছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। তার আগে ১১ অক্টোবর হল খুলবে।
ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের হল খুলবে ২৫ অক্টোবর। এরপর থেকে বিভাগগুলো তাদের বিভাগীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সশরীর ক্লাস নিতে পারবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮ অক্টোবর স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষ এবং স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য হল খুলে দেওয়া হবে। এরপর ২৬ অক্টোবর থেকে অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে ওঠানো হবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলবে ৪ অক্টোবর এবং সশরীর ক্লাস শুরু হবে ২১ অক্টোবর।
গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ অক্টোবর থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েটের সব শিক্ষার্থী, স্নাতকের কয়েকটি অনুষদের চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য হল খোলা হবে। আর ১৮ অক্টোবর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে।
এ ছাড়া পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীর ক্লাস শুরু হবে ২৫ অক্টোবর এবং ২১ অক্টোবর হল খুলবে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ৭ অক্টোবর খুলবে এবং সশরীর ক্লাস শুরু হবে ১৭ অক্টোবর।
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হবে ৪ অক্টোবর।
গোপালগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (চতুর্থ বর্ষ) এবং স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য হল খোলা হবে ৭ অক্টোবর। আর অন্য শিক্ষার্থীদের জন্য হল খোলা হবে ২০ অক্টোবর।
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সশরীর শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এখন একাডেমি কাউন্সিলের সভায় ২৮ অক্টোবর থেকে আবাসিক হল খোলার সুপারিশ করা হয়েছে। এ মাসেই খুলবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ওহিদুজ্জামান জানিয়েছেন, ৭ অক্টোবর সশরীর প্রতিটি বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হবে।
হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দুর্গাপূজার ছুটির পর খুলবে বলে আশা করেছেন একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। ৫ অক্টোবর এটি ঠিক হবে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ মাসে খুলবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্গাপূজার ছুটি শেষে ১৯ অক্টোবরের পরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীর ক্লাস শুরু হবে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স ইউনিভার্সিটির স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য হল খোলা হবে ৫ অক্টোবর। আর ৭ অক্টোবর সশরীর ক্লাস শুরু হবে।
আরো পড়ুন:
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা থাকা উচিত : ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ