আইন আদালত

এসপির বিরুদ্ধে সহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ : মামলা নিতে আদালতের নির্দেশ

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: পুলিশের এক নারী পরিদর্শককে ধর্ষণ করার অভিযোগে পুলিশ সুপার (এসপি) মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার জন্য উত্তরা-পূর্ব থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মোক্তার হোসেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) কর্মরত।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭–এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার এ আদেশ দেন। ওই ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আফরোজা আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

পিপি আফরোজা বলেন, বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আবেদন করেন পরিদর্শক পদমর্যাদার একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা। আদালত বাদীর জবানবন্দি, অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে ওই নারীর অভিযোগ এজাহার হিসেবে নেওয়ার জন্য উত্তরা-পূর্ব মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে নারী পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকার সপ্তম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এসপি মোক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা নেওয়ার আবেদন করেন।

মামলায় ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, দুই বছর আগে তিনি সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তখন সুদানে কর্মরত ছিলেন এসপি মোক্তার। ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর এসপি মোক্তার হোসেন তাকে ধর্ষণ করেন। পরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে সুদান ও বাংলাদেশে তাকে আরও কয়েকবার ধর্ষণ করেন মোক্তার হোসেন।

বাদী তার আর্জিতে লিখেছেন, “২০১৯ সালের মে মাসে সুদানের দারফুরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যান পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন। তার আগে থেকেই বাদী ওই মিশনে ছিলেন।”

যেহেতু মিশনের বিভিন্ন বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা হয়ে গিয়েছিল, সেজন্য মোক্তার হোসেন ‘সহযোগিতা নেওয়ার নাম করে’ তার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং এক পর্যায়ে বিভিন্ন অজুহাতে তার বাসায় যাতায়াত শুরু করেন বলে বাদীর ভাষ্য।

আর্জিতে তিনি বলেছেন, ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে তার বাসায় তাকে ‘ধর্ষণ করেন’ তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মোক্তার হোসেন। সেই ঘটনার একটি বিবরণও মামলার আবেদনে তুলে ধরেছেন বাদী।

তিনি বলেছেন, ওই ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য ‘হুমকি দিয়ে’ সেদিন চলে যান মোক্তার হোসেন। পরে ২২ ডিসেম্বর আবারও ওই বাসায় গিয়ে প্রথমে ‘ভুল হয়েছে; বলে ক্ষমা চান এবং তারপরই আবারও ‘ধর্ষণ’ করেন।

আর্জিতে বলা হয়েছে, বাদীকে ‘মুখে মুখে কলেমা পড়ে বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়েছিলেন আসামি। পরে ছুটিতে দেশে ফিরে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ‘বিয়ের  প্রলোভন দেখিয়ে’ ঢাকার উত্তরার একটি হোটেলে নিয়ে তাকে আবারও ‘ধর্ষণ’ করেন।

পরে ওই বছরের ২৬ জুন থেকে ৩০ জুন সুদানের খার্তুমের একটি হোটেলে এবং ১০ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর ঢাকার উত্তরার ওই হোটেলে ৩০৬ নম্বর কক্ষে আবারো তাকে ‘ধর্ষণ’ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন বাদী।

তিনি আর্জিতে লিখেছেন, দেশে ফেরার পর তিনি বিয়ে নিবন্ধনের তাগিদ দিলে আসামি ‘তালবাহানা’ শুরু করেন। ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল বাদী রাজারবাগে আসামির বাসায় উপস্থিত হয়ে বিয়ে রেজিস্ট্রি ও কাবিন নামা সম্পন্ন করতে বলেলে আসামি তাতে ‘অস্বীকৃতি’ জানান।

আসামির বাসায় তার স্ত্রী এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা উত্তজিত হয়ে সেদিন বাদীকে ‘মারধর করেন’ বলেও আর্জিতে অভিযোগ করা হয়েছে।

মহামারীতে আদালত বন্ধ থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে আর্জিতে উল্লেখ করেছেন বাদী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *