নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার দুর্নীতির মামলায় খালাস পাওয়া শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ এ রায় দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি খুরশিদ আলম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তবে কতদিনের মধ্যে তাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে সে ব্যাপারে কিছু বলেননি। তিনি জানান, রায়ের লিখিত আদেশে আত্মসমর্পণের সময় উল্লেখ থাকবে।
এর আগে সোমবার ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্ম ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় দুই আসামি টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো. শাহজাহান এবং নিরঞ্জন চন্দ্র সাহার খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপিল করা হয় বলে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই মামলায় গত ৯ নভেম্বর রায় দেন ঢাকার আদালত। রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে (সুরেন্দ্র কুমার) সিনহাকে ১১ বছর দণ্ড দেওয়া হয়।
এছাড়া মামলার অপর আট আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড এবং দুই আসামি শাহজাহান ও নিরঞ্জনকে খালাস দেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় খালাস পাওয়া দুই আসামির রায়ের বিরুদ্ধে সোমবার হাইকোর্টে আপিল করে দুদক।
প্রসঙ্গত, এই মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে (এস কে সিনহা) ১১ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে সাত বছর এবং দুর্নীতির দায়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে দুটি সাজা একসঙ্গে চলার কারণে কানাডায় অবস্থান করা দেশের সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে সাত বছর জেল খাটতে হবে। ৯ নভেম্বর এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
এছাড়া একই মামলায় অপর আট আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দুইজনকে খালাস দেওয়া হয়। তারা হলেন টাঙ্গাইলের নিরঞ্জন সাহা ও শাহজাহান। আদেশে জালিয়াতির মাধ্যমে ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ঋণের চার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় মানি লন্ডারিংয়ের এর দায়ে এসকে সিনহাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারক।
মামলায় অপর দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতি, ফারমার্স ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক ক্রেডিটপ্রধান গাজী সালাহউদ্দিন, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম শামীম, সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, ভাইস প্রেসিডেন্ট লুৎফুল হক, গুলশান শাখার ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সফিউদ্দিন আসকারী, এস কে সিনহার কথিত পিএস রণজিৎ চন্দ্র সাহা, রণজিতের স্ত্রী সান্ত্রী রায়।
ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে কমিশনের জেলা সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১ এ এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর তদন্ত করে একই বছরের ৯ ডিসেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ।
আরো পড়ুন:
এনআইডি অনুযায়ী সংশোধন করা যাবে পাসপোর্ট