কৃষি-মৎস্য

এবার মেঘনায় ইলিশের উৎপাদন বাড়বে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকায় চলতি মৌসুমে পৌনে ছয় লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। প্রজনন মৌসুমে ওই এলাকায় ৫১ শতাংশের বেশি মা ইলিশ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়ার সুযোগ পাওয়ায় এ সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন গবেষকেরা।

স্থানীয় মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে মেঘনার ৭০ কিলোমিটার এলাকায় ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে ইলিশ বিক্রি, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, সংরক্ষণ ও মজুত করাও নিষিদ্ধ করা হয়।

চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইলিশ গবেষক আনিসুর রহমান শনিবার মুঠোফোনে বলেন, গত বছর ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মেঘনার চাঁদপুর এলাকায় ৫১ দশমিক ২ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়ে। গত বছর এ এলাকায় সাড়ে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদিত হয়। এবার ওই ২২ দিনে প্রচুর পরিমাণ মা ইলিশ জেলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়ে। চলতি অক্টোবরের প্রথম দিকে অমাবস্যার সময় মা ইলিশের প্রজনন কিছুটা কম হলেও পূর্ণিমার সময় ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ নিরাপদ প্রজনন সম্পন্ন করে। ডিম ছাড়া মা ইলিশের সংখ্যা এবার গতবারের চেয়ে বেশি বলেই ধারণা করছেন।

আনিসুর রহমান দাবি করেন, গত বছর চাঁদপুরের মেঘনায় যে পরিমাণ ইলিশ উৎপাদিত হয়, এবার ওই পরিমাণ ও সংখ্যা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবার জেলায় পৌনে ছয় লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর গত পাঁচ দিন বাজারে যে হারে ডিমওয়ালা ইলিশ আসছে, তাতে ইলিশ উৎপাদনের ওপর প্রভাব পড়বে কি না, জানতে চাইলে এই ইলিশ গবেষক বলেন, এমনিতে সারা বছরই ইলিশ কমবেশি ডিম ছাড়ে। বেশি ডিম ছাড়ে প্রজনন সময়ে, অর্থাৎ অক্টোবর মাসের অমাবস্যা ও পূর্ণিমাতে। এর আগে-পরেও কিছু ইলিশ নদীতে ডিম ছাড়তে পারে। এটাই স্বাভাবিক। এতে আগামীতে প্রত্যাশিত পরিমাণে ইলিশ উৎপাদনের ওপর তেমন প্রভাব পড়বে না। গত বছরও এর প্রভাব পড়েনি।

মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম বলেন, এবার মা ইলিশের প্রজনন নিশ্চিত করতে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মেঘনার বিভিন্ন এলাকায় ৪৪টি অভিযান চালানো হয়। এসব অভিযানে প্রায় ২৭ লাখ মিটার কারেন্ট জাল ও প্রায় ৪ মণ ইলিশ জব্দ করা হয়। জরিমানা করা হয় অনেকে জেলেকে। তাঁর দাবি, এবার মা ইলিশ রক্ষার অভিযান অনেকটাই সফল হয়েছে। ইলিশের প্রজননও নির্বিঘ্ন হয়েছে। এতে আগামীতে মেঘনায় গত বছরের চেয়ে বেশি পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাবে।

আরো পড়ুন:

৪০ টাকা কেজিতে চাল, ২৭ টাকায় ধান কিনবে সরকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *