এবার গ্যাসের পর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব
গ্যাসের পর বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব জানিয়েছেন। গ্যাস বিতরণ কম্পানিগুলোর পর এবার বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়াতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) প্রস্তাব জমা দিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। তবে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিধিসম্মত না হওয়ায় গ্রহণ করেনি বিইআরসি।
রাষ্ট্রায়ত্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি বলছে, বিপিডিবির বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী হয়নি বলে তারা ফেরত দিয়েছে। তাদের নিয়ম মেনে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
বিইআরসির সদস্য মোহাম্মদ বজলুর রহমান বলেন, বিপিডিবি পাইকারি দাম বাড়ানোর একটি প্রস্তাব জমা দেয়। প্রস্তাবটি জমা দেওয়ার সময় যথাযথ আইনি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। তাই পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, প্রস্তাবের সঙ্গে তিন বছরের অডিট রিপোর্ট জমা দিতে হয়, এক বছরের প্রাক্কলিত আয়-ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে হয়, প্রস্তাব অনুযায়ী দর বাড়ানো হলে ভোক্তাদের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে—এসব তথ্য জমা দিতে হয়।
এগুলোসহ আরো কিছু প্রতিবেদন জমা দিতে হয়, যা আবেদনের সঙ্গে ছিল না। তাই বিপিডিবির আবেদনটি বাতিল কিংবা গ্রহণ না করে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিপিডিবি বিদ্যুতের একক ক্রেতা। উৎপাদনের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি বিদেশ থেকে আমদানি ও বেসরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুকেন্দ্রের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনছে।
সেই বিদ্যুৎ পাঁচটি বিতরণ কম্পানির কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করে তারা। নিজেরা ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের শহরাঞ্চলে সরাসরি বিতরণ করছে।
বিপিডিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় এমনিতেই বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এখন গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ আরো বেড়ে যাবে। তাই পাইকারি দাম সমন্বয়ের একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, পাইকারি পর্যায়ে গত বছর প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বিপিডিবির। তেলের দাম বাড়ায় এই লোকসান আরো বাড়বে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৩ জানুয়ারি জ্বালানি বিভাগ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব বিইআরসিতে পাঠাতে পেট্রোবাংলাকে নির্দেশনা দেয়। পরে পেট্রোবাংলা থেকে আমদানি করা এলএনজি ও দেশীয় গ্যাসের দাম, ভ্যাট-ট্যাক্স, বিভিন্ন তহবিলের চার্জ ধরে ৫ জানুয়ারি একটা খসড়া হিসাব বিতরণ কম্পানিগুলোতে পাঠানো হয়।
এরপর গ্যাস বিতরণ কম্পানিগুলো নিজেদের আয়-ব্যয় উল্লেখ করে কমিশনে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠায়। বিপিডিবিও পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিইআরসিতে পাঠিয়েছে।