স্বাস্থ্য

এনআইডি ছাড়া যেভাবে পেতে পারেন টিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: টিকা পাওয়ার বয়সসীমা সরকার কয়েক ধাপে কমিয়ে ১৮ বছর করতে যাচ্ছে। আগামী ৮ আগস্ট থেকে ১৮ বছর বয়সীরাও টিকা পাবেন। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই, তারাও টিকা পাবেন। কিন্তু কীভাবে? প্রক্রিয়া কী হবে? জানা গেছে, এনআইডি ছাড়া টিকা দেওয়ার পদ্ধতির বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের একটি পরামর্শও দিয়েছে।


১৮ বছর বয়সীদের টিকা পাওয়া নিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক নিজেই ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এ বিষয়ে আজ রোববার প্রতিমন্ত্রী বলেন, এনআইডি না থাকলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশপত্র নিয়ে টিকাকেন্দ্রে গিয়ে টিকা দিতে পারবেন। সুপারিশপত্র শুধু টিকার জন্য আলাদা কিছু হবে কি না, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এই ফরম্যাটটার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বলতে পারবে।’


প্রতিমন্ত্রী জানান, এনআইডি যাদের নেই তাদের টিকা কীভাবে হবে এবং অনলাইনে নিবন্ধন করতে যারা পারবেন না তারা কীভাবে টিকা পাবেন, সে বিষয়ে তারা পরামর্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে জুনাইদ আহমেদ বলেন, নিবন্ধনের কারণে যেন টিকা থেকে কেউ বঞ্চিত না হন, এটা যখন বলা হলো তখন ডিজিটাল নিবন্ধনের পদ্ধতিকে সমন্বয় করে নেওয়ার জন্য আইসিটি বিভাগ পরামর্শ দেয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অন দ্য স্পট, অর্থাৎ কেন্দ্রে গিয়েই নিবন্ধন করে টিকা দেওয়া।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যার স্মার্টফোন নেই, ইন্টারনেট–সুবিধা অথবা প্রিন্টিংয়ের সুবিধা নেই, তারা কেন্দ্রে গিয়ে এনআইডি দেখালে সেখানে নিবন্ধন করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে টিকার কার্ডও আলাদা করে নিতে হবে না। কেন্দ্রেই একটি কার্ড থাকবে। সেখানে নাম-ঠিকানা, টিকার তারিখ, কোন টিকা এবং পরবর্তী টিকার তারিখ উল্লেখ থাকবে। টিকার পরে কার্ড দিয়ে দেবে। তবে এভাবেই টিকা দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সিদ্ধান্ত নেবেন।


দিনে এখন চার থেকে পাঁচ লাখ মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করছেন। আর টিকা দেওয়া হচ্ছে দুই লাখ জানিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারের কাছে এখন টিকা আছে এবং আরও টিকা আসছে। এখন দিনে যেন ৫০ লাখ নিবন্ধন হলেও সুরক্ষা সাইট তা হ্যান্ডেল করতে পারে, এমন প্রস্তুতি আছে। প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি আছে। টিকা প্রদানের প্রস্তুতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিচ্ছে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও এটুআইকে বলা হয়েছে, সারা দেশের সাত হাজার ডিজিটাল সেন্টার যেন সব ধরনের সহযোগিতা করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী চাইছেন সবাই যেন টিকা পান।


করোনা প্রতিরোধে দুই ডোজ টিকা নেওয়া হলে একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এনআইডি ছাড়া টিকা নিলে টিকার সার্টিফিকেট পাওয়ার বিষয়ে জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘শুধু বিদেশ যাওয়া বা ধনীদের জন্য সার্টিফিকেট দরকার, বিষয়টা তা নয়। ভবিষ্যেতের জন্য প্রয়োজন। আমরা উন্নত জীবনযাত্রা উপহার দিতে চাই। কেউ টিকা নিয়েছে কি না, তা সার্টিফিকেট থাকলে বোঝা যাবে। ডিজিটালি সম্ভব না হলে হার্ড কপি দিতে হবে। যেভাবে অন্যান্য টিকার ক্ষেত্রে দেওয়া হয়।’
গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। তখন বয়সসীমা ছিল ৫৫ বছর। কিন্তু ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই নিবন্ধনের জন্য ৪০ বছর বয়সসীমা নির্ধারণ করে সরকার। এরপর তা আরেক ধাপ কমিয়ে ৩৫ বছর করা হয়। এরপর ১৯ জুলাই থেকে ৩০ বছর বয়সীরাও নিবন্ধন করতে পেরেছেন। সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই বয়সসীমা আরও কমিয়ে ২৫ বছর করা হয়। আর এখন তা ১৮ বছর করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *