নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: বদলে গেছে ‘মেইড ইন জিঞ্জিরা’র মানে। এক সময় তাচ্ছিল্য করা হলেও আজ সেখানে শিল্পনগরী। ছোট-বড় মেরামত থেকে শুরু করে আস্ত জাহাজ তৈরি- সবই হচ্ছে বুড়িগঙ্গার ওই পাড়ে। আবার এসব জাহাজের ২৫ শতাংশ যন্ত্রাংশই যোগান দিচ্ছে পাশেই গড়ে ওঠা মাঝারি শিল্প।
তবে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছে না তারা। যদিও শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে এসব শিল্পকে এক করে নিতে কাজ করছেন তারা।
এক সময় নকল পণ্য বোঝাতে তাচ্ছিল্য করে বলা হতো ‘মেইড ইন জিঞ্জিরা’। কালের বিবর্তনে এখানে একে একে ক্ষুদ্র, মাঝারি থেকে গড়ে উঠেছে জাহাজ নির্মাণের মত ভারী শিল্প। তাই এখানে যে শিল্প সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছে, তা সহজেই গর্ব করে বলার সময় এসেছে, সময়টা এখন মেইড ইন জিঞ্জিরার।
নদীর পাশে সারাদিনই কানে বাজে টুকটাক শব্দ। দিনে দিনে বুড়িগঙ্গার পাড় ঘেঁষে প্রায় দেড়শ ডক ইয়ার্ড গড়ে উঠেছে। একটা সময় ছোটখাটো মেরামতের কাজ করলেও এখন যাত্রীবাহী আর পণ্যবাহী জাহাজের সকল মেরামত হয় এই এলাকায়।
চট্টগ্রাম থেকে আসে ইস্পাতের পাত। হাতুড়ির বাটালি আর ওয়েলডিং এর মাধ্যমেই সনাতনী কায়দায়ই চলে কাজ।
শুধু কি মেরামত, আস্ত জাহাজও তৈরি করে ফেলছেন এখানকার শ্রমিকরা। এ বিষয়ে এক শ্রমিক বলেন, আমরা সহজেই দেখে দেখে একটি জাহাজ তৈরি করতে পারি।
আবার পাশেই এই জাহাজ নির্মাণকে ঘিরে গড়ে উঠেছে মাঝারি শিল্প। এখানেও সনাতনী ম্যাজিক। হাতেহাতেই তৈরি হচ্ছে জাহাজের অনেক যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ। ছোট বড় জাহাজের পাখা এখানে তৈরি হচ্ছে পেশাদার দক্ষ হাতে। দরকার এসব শিল্পকে একটু তুলে ধরা। এক শ্রমিক বলেন, যেকোনো ধরণের পাখা হুবহু তৈরি করতে পারি আমরা। কোনো এদিক-সেদিক হবে না।
শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, এইসব শিল্পকে একটি কাঠামোয় নিয়ে আসতে কাজ চলছে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, মুন্সিগঞ্জ, সাভারে শিল্পনগরী গড়ে তুলতে আমাদের কাজ চলছে এবং সেখানে সবার জন্যই জমি বরাদ্দ দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, আশির দশক থেকেই ধীরে ধীরে উত্থান হয় জিঞ্জিরার এই শিল্প।