ক্রীড়া প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: তার শরীরের ওজন ৬১ কেজি; হাত দিয়ে মাথার ওপরে তুলেছেন তিনি ১৭২ কেজি- শরীরের ওজনের প্রায় তিন গুণ। শরীরের তুলনায় দ্বিগুণ বা আড়াই গুণ ওজন তোলা ভারোত্তোলকদের সামর্থ্যের মধ্যেই পড়ে; কিন্তু সেটি যদি হয় মাত্র এক পায়ে ভর করে?
চীনের লি ফ্যাবিন তেমন বিরল সামর্থ্যই দেখিয়েছেন টোকিও অলিম্পিকে। ৬১ কেজি ওজন শ্রেণিতে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১৭২ কেজি ভার তুলেছেন কেবল ডান পায়ে ভর দিয়ে। শেষ পর্যন্ত মোট ৩১৩ কেজি তুলে এই ইভেন্টে স্বর্ণও জিতেছেন প্রথমবার অলিম্পিক খেলতে আসা এই ভারোত্তোলক।
ফ্ল্যামিঙ্গো পাখির মতো এক পায়ে ভর করে খেলার কারণে ভারোত্তোলন জগতে তিনি ‘ফ্ল্যামিঙ্গো’ নামে পরিচিত। খেলার ধরনের ভিন্নতার কারণে বিশেষ নাম পেয়ে গেলেও এ নিয়ে যথেষ্টই বিনয়ী লি ফ্যাবিন, ‘আমি মানুষকে দেখানোর জন্য এভাবে খেলি না। আমি একজন লো-প্রোফাইলের মানুষ। এভাবে খেললে আমি স্বাচ্ছন্দ্যে ভার তুলতে পারি।’
লি তার বাঁ পা বাঁকা করে শূন্যে রেখে অন্য পায়ে ভর করে খেলা শুরু করেন ২০১৭ সাল থেকে। তখন খেলতেন ৫৬ কেজি ওজন শ্রেণিতে। ২০১৮ সালে ৬১ কেজি ওজন শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বড় মঞ্চে এক পায়ে খেললেন এই প্রথম। তবে অন্যদের এমন ঝুঁকি নিয়ে খেলতে নিরুৎসাহিত করেছেন ২৮ বছর বয়সী এই অ্যাথলেট, ‘আমার মাসল এবং পায়ের গড়ন এক পায়ে খেলার অনুকূলে। আমি জানি, মানুষ এভাবে দেখলে আনন্দ পায়। তবে সবাইকে পরামর্শ দেব নিজেরা এমন চেষ্টা না করার জন্য। কারণ এতে আহত হওয়ার ঝুঁকি আছে।’
লি ভারোত্তোলনের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হলেও টোকিওতে স্বর্ণ জিততে বড় প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতার মুখে পড়তে হয়েছে। প্রথম দিকে তাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন দুই পায়ে স্বাভাবিকভাবে খেলা ইন্দোনেশিয়ার ইকো ইরাওয়ান। তবে বিগত তিনটি অলিম্পিকে পদকজয়ী ইরাওয়ানের দুটি ‘লিফট’ অসফল হলে এগিয়ে যান লি। শেষ পর্যন্ত ৩০২ কেজি নিয়ে রৌপ্য পদক জেতেন ইন্দোনেশিয়ান ভারোত্তোলক, ২৯৪ কেজি তুলে ব্রোঞ্জ জেতেন কাজাখস্তানের ইগর সন।