প্রচ্ছদ

একসঙ্গে যে খাবারগুলো কখনোই খাবেন না


যারা ভোজনরিসক তারা খেতে বসলে অনেক সময় একের পর এক খাবার প্লেটে তুলে নেন। একটিবারও চিন্তা করেন না, পর পর একাধিক খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত কিনা। এমন বহু খাবার আছে, যেগুলো পরপর বা একসঙ্গে খাওয়া একেবারেই অনুচিত।
এতে করে তাৎক্ষণিক পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা, গ্যাস, বমিবমিভাব, বমি হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে দেখা দিতে পারে ক্রনিক হজমের সমস্যা, দুর্বলতা, ইমিউনিটি কমে যাওয়াসহ নানান জটিল সমস্যা। তাই খাবারের বিষয়ে প্রত্যেকের সচেতন হওয়া উচিত। তাহলে জেনে নিন, কোন কোন খাবার একসঙ্গে বা পর পর খাবেন না।
জ্বাল খাবার ও ফল
দুপুরের লাঞ্চে জ্বাল জাতীয় ভারী খাবার খাওয়ার পর পর ফল খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয়। দুই ধরনের খাবারের হজমে দুই রকম সময় লাগে। এই সময়ের তারতম্যের কারণে ফল পেটের ভেতরে ফারমেন্ট হতে শুরু করে দেয়। এতে করে ফলের পুষ্টিগুণ শরীর ঠিকমতো গ্রহণ করতে পারে না। পাশাপাশি ফারমেন্টেশনের কারণে পেট ফেঁপে যেতে পারে। তাই খাবারের অন্তত আধ থেকে এক ঘণ্টা পর ফল খাবেন।
পিৎজা ও কোল্ড ড্রিংকস
আজকাল কম্বো অফারে পিৎজা ও কোল্ড ড্রিংকস কিনে জমিয়ে রসনা তৃপ্তি করা মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তবে খাবারের এই কম্বিনেশনটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। পিৎজায় প্রচুর পরিমাণে স্টার্চ ও প্রোটিন থাকে। অপরদিকে কোল্ড ড্রিংকসে রয়েছে অতিরিক্ত চিনি। পেটের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে স্টার্চ, প্রোটিন ও চিনির মিশ্রণ হজম প্রক্রিয়াকে খুব ধীর করে দেয়। এর ফলে হতে পারে পেট ব্যথা।
দুধ চা
চায়ের মধ্যে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের পক্ষে ভীষণ উপকারী। কিন্তু মুশকিলটা হলো, চায়ে দুধ মেশালে দুধের মধ্যে থাকা প্রোটিন চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সঙ্গে মিশে যায়। ফলে শরীর চায়ের বেশিরভাগ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টকে গ্রহণ করতে পারে না। তার উপর চায়ে দুধ মেশালে হজমেরও সমস্যা হতে পারে। আজকাল প্রায় সবাই দুধ চা পান করতে অভ্যস্ত। যদি সম্ভব হয়, চায়ে দুধ মেশানোর অভ্যেসটা ছাড়ুন। বরং লেবু মেশাতে পারেন। এতে চায়ের গুণ কমে না, স্রেফ স্বাদবদল হয়।
দইয়ের সঙ্গে ফল
শেষপাতে দইয়ের সঙ্গে ফল মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যেস থাকলে আজই ছাড়ুন। ফলের মধ্যে থাকা অ্যাসিড দইয়ের প্রোটিনের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটিয়ে হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া হতে পারে ফুড অ্যালার্জিও।
চিজ ও বিনস
রেস্তোরাঁর বহু কন্টিনেন্টাল খাবারে চিজ ও বিনস একসঙ্গে দেওয়া থাকে। আবার অনেক সময়ই হয় যে চিজ যুক্ত কোনো খাবার খাওয়ার পর পর বিনসের কোনো খাবার খাওয়া হচ্ছে। চিজের মতো দুগ্ধজাত খাবার ও বিনস একসঙ্গে খেলে হজমের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডিম, মাছ, মাংস
ডিম, মাছ, মাংস-এই তিনটি খাদ্যেই আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। এতটা প্রোটিন একসঙ্গে শরীরের প্রয়োজন হয় না। পাশাপাশি এই পরিমাণ প্রোটিন হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে এবং পেটের ভেতরে গণ্ডগোল বাধাতে পারে। তাই খাদ্যগুলো একসঙ্গে বা পরপর খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভালো।
খেতে খেতে পানি পান
খাবার খাওয়ার সময় পেটের ভেতরে বেশকিছু রাসায়নিক ও এনজাইম বা উৎসেচক তৈরি হয়। এগুলো খাদ্য হজমে সাহায্য করে। তবে খাবার খেতে খেতে পানি পান করলে বা খাবার খাওয়ার পরপরই পানি পান করলে হজমে সহায়তাকারী এনজাইম বা উৎসেচক ও রাসায়নিক পানির সঙ্গে মিশে যায়। ফলে খাবার হজমে পাকস্থলীকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। তাই খাবার আগে-পরে অন্তত আধঘণ্টা পর পানি পান করা উচিত।
দুগ্ধজাত খাবার ও অ্যান্টিবায়োটিক
ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াটাই হয়তো ভালো। তবে মুশকিল হল, অনেকেই দুগ্ধজাত খাবার পরপরই অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে ফেলেন। অনেক অ্যান্টিবায়োটিক শরীরে দুগ্ধজাত খাবারের মধ্যে থাকা আয়রন ও ক্যালশিয়াম শোষণে বাধা দেয়।ফলে দুধের পুষ্টিগুণ থেকে শরীর বঞ্চিত হয়। তাই অ্যান্টিবায়োটিক খাবার আগে ও পড়ে অন্তত একঘণ্টা দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *