ডা. অনুপ দাস :
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ এবং মৃত্যু যখন গুরুতর আকার ধারণ করেছে ঠিক তখনই ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে করোনা রোগীর পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকা ও তার আশেপাশের শহরে এর প্রবণতা সব থেকে বেশি। এর জন্য আমাদের সকলের প্রয়োজন সচেতনতার। কিন্তু করোনা আর ডেঙ্গুর লক্ষণের মধ্যে অনেকটা মিল রয়েছে। এজন্যই বোঝা যায় না, করোনা না ডেঙ্গু। এর জন্য আমাদের করোনা ও ডেঙ্গুর লক্ষণ সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
যে যে লক্ষণের সাথে ডেঙ্গু জ্বর এবং করোনার মিলঃ
১. জ্বর ( স্বল্পমাত্রা ৯৯° থেকে উচ্চমাত্রা ১০১° বা এর বেশি কাপুনি দিয়ে জ্বর)
২. মাথা ব্যাথা এবং চোখের কোঠরে ব্যাথা
৩. হাত-পা ব্যাথা, পিঠে ব্যাথা
৪. মাথা ঘুরানো, বমি অথবা বমি ভাব লাগা
৫. শারীরিক দুর্বলতা
৬. খাবারে অরুচি / স্বাদ না পাওয়া
৭. হাঁচি – সর্দি
শুধুমাত্র করোনা লক্ষণ
১. গলা ব্যাথা
২.কাশি
৩. শ্বাসকষ্ট
৪.পেটে ব্যাথা
৫. পাতলা পায়খানা
৬. ঘ্রান শক্তি কমে যাওয়া
শুধুমাত্র ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
১. জ্বরের ৪-৫ দিন পরে শরীরে লাল এলার্জির মত র্যাস হতে পারে।
২. শরীরের প্রতিটি অস্থিসন্ধিতে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব হয়।
৩. নাক দিয়ে রক্ত
৪. কালো পায়খানা।
আবার একই ব্যক্তি একই সাথে কোভিড-১৯ এবং ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন।
সেক্ষেত্রে সেই রোগীকে ডেঙ্গু জ্বর এবং কোভিড১৯ – দুটোর পরীক্ষা একসাথেই করতে হবে। পরিস্থিতি যদি জটিলতার ইঙ্গিত দেয় তাহলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
যখন হাসপাতালে ভর্তি করতে হবেঃ
রোগীর নাক থেকে রক্ত পড়লে, কালো পায়খানা, অতিরিক্ত বমি করলে, রক্তচাপ কমে গেলে অবশ্যই হাসপাতালে দ্রুত নিতে হবে।
ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে ‘শক সিন্ড্রোম’ হতে পারে যেটি রোগীর মৃত্যুর কারণ হয়।
রোগীর শ্বাসকষ্ট, মুখ-ঠোঁট নীলচে হয়ে গেলে, বুকে চাপ অনুভব করলে, বার বার পাতলা পায়খানা হলে অবশ্যই জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
আর যাদের আগে থেকেই ডায়েবেটিক এবং হৃদরোগ আছে, এক্ষেত্রে তারা সব থেকে বেশি ঝুঁকিতে থাকবেন। আর এটা যে কোনো বয়সের মানুষকেই আক্রান্ত করতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বর বা করোনা হলে কী কী খাবেনঃ
১. প্রচুর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ডিম, মাংস, দুধ (পাতলা পায়খানা হলে দুধ জাতীয় খাবার বন্ধ থাকবে)
২. ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি জাতীয় ফল এবং সবজি
৩. প্রচুর পানি এবং যে কোনো তরল খাবার।
৪. ওমেগা ৩ ও ৬ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার।
ডা: অনুপ দাস, রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও), রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট, (আর.এন.পি.পি) প্রজেক্ট।