নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: তেড়েফুঁড়ে শুরু করা আর্জেন্টিনা বিরতির পর রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নিয়ে ধরে রাখল লিড। উরুগুয়ে বল পায়ে প্রাধান্য দেখালেও আক্রমণে তীক্ষ্ণতা দেখাতে পারল না। তাদেরকে হারিয়ে ২০২১ কোপা আমেরিকায় প্রথম জয়ের দেখা পেল লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। আজ শনিবার সকালে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে প্রতিযোগিতার সফলতম দুই দলের লড়াইয়ে ১-০ গোল উরুগুয়েকে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। ব্রাসিলিয়ার মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধের শুরুর দিকে অধিনায়ক লিওনেল মেসির অ্যাসিস্টে জয়সূচক গোলটি করেন মিডফিল্ডার গিদো রদ্রিগেজ।
সব মিলিয়ে টানা তিন ড্রয়ের পর জয়ের স্বাদ নিল আলবিসেলেস্তেরা। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ ফুটবল আসরের আগের ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও চিলির সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছিল তারা।
প্রতিপক্ষের গোলমুখে মোট আটটি শট নেয় কোপার ১৪ বারের শিরোপাজয়ী আর্জেন্টিনা। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল পাঁচটি। সবগুলোই ছিল প্রথমার্ধে। অন্যদিকে, রেকর্ড ১৫ বারের কোপা চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে একবারের জন্যও পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে। নিকোলাস ওতামেন্দি-ক্রিস্তিয়ান রোমেরোদের জমাট রক্ষণের বিপরীতে তাদের চারটি শটের একটিও লক্ষ্যে ছিল না।
একাদশে চারটি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। রক্ষণভাগের খোলনলচে রীতিমতো পাল্টে ফেলা হয়। টিকে যাওয়া ওতামেন্দির সঙ্গে যুক্ত হন রোমেরো, নাহুয়েল মলিনা ও মার্কোস আকুনিয়া। মাঝমাঠে লেয়ান্দ্রো পারেদেসের পরিবর্তে জায়গা মেলে রিয়াল বেতিসের গিদোর।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই উরুগুয়ের গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরাকে মঞ্চে আবির্ভূত হতে হয়। আকুনিয়ার দূরপাল্লার কোণাকুণি শট লুফে নিতে অবশ্য বেগ পেতে হয়নি তাকে। চার মিনিট পর গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল আর্জেন্টিনা।
চিরাচরিত সর্পিলাকার ঢঙে ডি-বক্সে ঢুকে শট নিয়েছিলেন বার্সেলোনার তারকা মেসি। মুসলেরা তা ফিরিয়ে দিলেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি। পরে ফাঁকায় থেকেও আলগা বলে ঠিকমতো পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন ছন্দের অভাবে ভুগতে থাকা ইন্টার মিলানের ফরোয়ার্ড লাউতারো মার্তিনেজ।
দুই মিনিট পর রদ্রিগো দে পলের ক্রসে রোমেরোর হেড ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক। তবে ১৩তম মিনিটে আর দলকে বাঁচাতে পারেননি তিনি। ছোট করে কর্নার নেওয়ার পর বামদিক থেকে মেসি গোলমুখে ফেলেন নিখুঁত ক্রস। দূরের পোস্টে প্রতিপক্ষের রদ্রিগো বেন্তানকুরের চাপ সামলে দারুণ হেডে জাল খুঁজে নেন গিদো।
২৭তম মিনিটে উরুগুয়ের পেনাল্টির আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। ভিএআরের সাহায্যও নেননি তিনি। যদিও ডি-বক্সে পড়ে গিয়েছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্ট্রাইকার এদিনসন কাভানি। ৪৩তম মিনিটে বেন্তানকুরের শট লক্ষ্যে থাকেনি।
এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়ার্ধে মনোযোগী হয় রক্ষণ সামলাতে। সেই সুযোগে ম্যাচের চালকের আসনে বসে পড়ে অস্কার তাবারেজের শিষ্যরা। কিন্তু প্রতিপক্ষকে নাড়িয়ে দেওয়ার মতো ভীতি কখনোই ছড়াতে পারেনি তারা।
৬৯তম মিনিটে সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয় উরুগুয়ের। মাতিয়াস ভিনার ক্রসে কাছের পোস্টে অল্পের জন্য মাথা ছোঁয়াতে পারেননি কাভানি। দূরের পোস্টে বলে পা লাগাতে পারেননি ম্যাচ জুড়ে নিষ্প্রভ থাকা অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ। ছয় মিনিট পর তার বাই-সাইকেল কিক লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে উঠে গেছে আর্জেন্টিনা। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে চিলি। তিনে থাকা প্যারাগুয়ের অর্জন এক ম্যাচে ৩ পয়েন্ট। হার দিয়ে আসর শুরু করা উরুগুয়ের পয়েন্ট শূন্য। দুই ম্যাচ খেলেও পয়েন্টের খাতা খুলতে পারেনি বলিভিয়া।
আগামী মঙ্গলবার নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে প্যারাগুয়ের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা। মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায়। তার আগে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে উরুগুয়ে খেলবে চিলির বিপক্ষে।