নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে বিভিন্ন সূচকে ভারতকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে ভারতজুড়ে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে বাংলাদেশের উন্নয়নের বিভিন্ন চিত্র।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এই উন্নয়ন চিত্র উঠে আসে।
বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে কোন কোন সূচকে কী পরিমাণ এগিয়ে আছে তা নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কলকাতার বেসরকারি টেলিভিশন ‘কলকাতা টিভি’।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব ক্ষুধা সূচক থেকে নারী-পুরুষ সমতায় ভারতকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ভারতে শিশু মৃত্যু হার ১ হাজারে ৮৮ জন। বাংলাদেশ এ হার ৮৪ জন।
ভারতীয়দের গড় আয়ু ৬৯ বছর। বাংলাদেশিদের গড় আয়ু তিন বছর বেশি, ৭২ বছর। এর অর্থ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভারতের থেকে ভালোর দিকে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে কলকতার বিশেষায়িত হাসপাতাল যেগুলো বাংলাদেশি রোগীর ভরসায় থাকে, তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রতিবেদনে প্রশংসা করা হয় বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া ভিলেজ কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পের।
ভারতের থেকে বাংলাদেশি তরুণদের মধ্যে শিক্ষার হার বাড়ছে। উচ্চ শিক্ষায় নারীরা পুরুষকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ভারতের পুরুষের চেয়ে সংখ্যায় নারী কম। ‘প্রথম’ নামে একটি সংগঠনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালানো এক সমীক্ষায় জানানো হয়, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ভারতের ছাত্রছাত্রীর চেয়ে সাবলিলভাবে দেখে দেখে বই পড়তে পারে।
বাংলাদেশের সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (সরকারি, বেসরকারি, স্কুল, মাদরাসায়) বিনামূল্যে বই দিচ্ছে। যেখানে ভারতের সরকারি বিদ্যালয়ে শুধু বিনামূল্যে পাঠ্যবই দেওয়া হয়। শিক্ষা, স্বাস্থ্যে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে বেশি ব্যয় করছে। বাংলাদেশে ১০০ শিশুর মধ্যে ৩৩ জন অপুষ্টিতে ভোগে। ভারতে এ হার ৩৬ জন।
বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া পুষ্টি প্রকল্প ‘পুষ্টি আপা’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়। বলা হয়, বাংলাদেশে ভারতের মতো আমিষ ভোজের জটিলতা নেই। তাই বাংলাদেশের মানুষ ডিম, মাংস সবই খেতে পারছে। আর ভারতে শুধু শাকসবজি। সেই তালিকায় নেই দুধ, ঘি পনিরের মতো পুষ্টিকর খাবার।
বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ ঘরে টয়লেট আছে। ভারতে ৯৭ শতাংশ। বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ বিদ্যালয়ে টয়লেট আছে। ভারতের ৭৩ শতাংশ বিদ্যালয়ে টয়লেট রয়েছে। বলা হয়, স্বাস্থ্য সচেতনতায় বাংলাদেশ এগিয়ে।
শ্রমের জোগানে বাংলাদেশের মেয়েরা ভারতের চেয়ে অনেক এগিয়ে। চা, বাগান, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে নারীদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে।
ভারতে বেকারত্বের হার ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। বাংলাদেশে এ হার ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। গেল কয়েক বছরে শুধু মাথা পিছু আয়ে নয়; অনেক ক্ষেত্রে ভারতকে বাংলাদেশ ছাপিয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করা হয়। ভারত পাল্লা দিয়ে পিছিয়েছে বলেও বলা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ইসলামি সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে লড়ছে। মুজিব হত্যাকারীদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ভারতের সন্ত্রাসীদের দেশটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যেকোনও ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সুম্পর্ক রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে।
কৃষিখাতেও বাংলাদেশের উন্নতির প্রশংসা করা হয়। মাছ উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের সামনে আরও অনেক কাজ বাকি উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ভারত পিছিয়ে যাচ্ছে সবদিক থেকে। মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা নীরবে করে কাজ করছেন। এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।