শিল্প ও বাণিজ্য

ঈশ্বরগঞ্জে ত্রাণসামগ্রীতে কৃষিপণ্য : কৃষক পাচ্ছেন ন্যায্য দাম

ধূমকেতু প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে অসহায় হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের মানুষজনের জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হলেও সাহায্যসামগ্রীর মধ্যে মূলত থাকে চাল, ডাল, তেল, চিনির মতো গতানুগতিক পণ্যগুলোই। এদিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তরি-তরকারি, সবজি ও ফলমূল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। ঢাকার বাজারে সরবরাহ করতে না পেরে পানির দামে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। তবুও সব বিক্রি হচ্ছে না। নষ্ট হচ্ছে, পঁচে যাচ্ছে। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে যদি পঁচনশীল এসব কৃষিপণ্য অন্তর্ভুক্ত করা যেতো তাহলে কৃষকও ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারতেন, ত্রাণ প্রত্যাশীদের চাহিদাও মিটতো। ধূমকেতু.কমও এ প্রসঙ্গে গত ২২ এপ্রিল “ত্রাণে পঁচনশীল কৃষিপণ্য অন্তর্ভুক্ত করুন; কৃষক বাঁচান, দেশ বাঁচান” শিরোনামে ধূমকেতু.কম-এর সম্পাদক ও প্রকাশক খোকন কুমার রায়ের একটি মতামত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।

এমনই প্রেক্ষাপটে করোনা ও পবিত্র রমজানে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় সামর্থ্যহীনদের জন্য ‘ফ্রি সবজি হাট’কর্মসূচি চালু করেছে ‘মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠন। তারা কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে সবাজ কিনে অসহায় মানুষের মঝে বিতরণ করছে। রমজান মাসের প্রতি শনিবার এ হাট বসবে বলে জানিয়েছে আয়োজক সংসগঠন ।

এ হাটে বিনামূল্যে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, আলু, ঢেঁড়স ও টমেটো, মুড়ি, খেজুর আর তাজা মাছ বিতরণ করা হচ্ছে। গত শনিবার ১৫০টি পরিবারের মধ্যে বিভিন্ন রকম সবজি ও মাছ দিয়েছে তারা।

গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে আঠারবাড়ি ইউনিয়নের বনগাঁও এলাকায় এ হাট উদ্বোধন করেন ঈশ্বরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন।

জাকির হোসেন বলেন, “ফ্রি সবজির হাট একটি চমৎকার উদ্যোগ। এর ফলে একদিকে যেমন অসহায় দরিদ্ররা উপকৃত হচ্ছেন, পাশাপাশি কৃষকরা ন্যায্যমূল্যে তাদের কৃষি পণ্য বিক্রি করতে পারছেন।”

করোনাভাইরাসের জন্য সামাজিক দূরত্ব মেনে হাটের কার্যক্রম পরিচালনা করেন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা।

সংগঠনের সমন্বয়ক আজাহারুল ইসলাম পলাশ বলেন, “করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এবারের রমজানে সামর্থ্যহীনদের জন্য ‘ফ্রি হাট কর্মসূচি’চালু করেছি। কৃষিপণ্য আমরা সরাসরি কৃষকের ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করি। এর জন্য কৃষককে ন্যায্যমূল্য দিয়ে থাকি।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন দাতা ও প্রতিষ্ঠান এ কর্মসূচিতে আর্থিক অনুদান দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

সংগঠনটির কর্মসূচি কর্মকর্তা অনিক কুমার নন্দী বলেন, প্রতিদানের আশায় নয়, কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্যও নয়। ফ্রি হাটের দ্বিতীয় দিনে ১৫০ জন ক্রেতাকে বিনামূল্যে ১৪০ কেজি মাছ, ১৩০টি লাউ, ১৩০টি মিষ্টি কুমড়া, ১৪০ কেজি ঢেঁড়স, ১৫০ কেজি আলু, ১৩০ কেজি মুড়ি ও ৫০ কেজি খেজুর দেওয়া হয়েছে।

“এসব আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা নিজেরাই কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে সংগ্রহ করেন,” জানান তিনি।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মোখলেছুর রহমান জানান, স্বেচ্ছাসেবীদের ফ্রি সবজির বাজার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। এ হাটের যে কোনো সহযোগিতায় তাদের পাশে থাকবেন বলেও জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে আঠারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আলমগীর বলেন, এটি অবশ্যই একটি প্রসংশনীয় উদ্যোগ। এতে কৃষকগণ উপকৃত হবেন এবং দরিদ্র মানুষজনও আরো বেশি তরতাজা ও পুষ্টিকর খাবার পাবেন। তিনি এমন মানবিক উদ্যোগের পাশে সব সময় আছেন বলেও জানান।

** নিচের লিংকে ক্লিক করে আরো পড়ুন: “ত্রাণে পঁচনশীল কৃষিপণ্য অন্তর্ভুক্ত করুন; কৃষক বাঁচান, দেশ বাঁচান”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *