প্রচ্ছদসর্বশেষ

ঈদ ঘনিয়ে আসতেই জমজমাট হচ্ছে কোরবানির হাট

রাজধানীর হাট থেকে কোরবানির পশু কিনে বাড়ি ফিরছেন ক্রেতারা। গতকাল বারিধারার ভাটারা হাট এলাকা থেকে তোলা। ছবি : কালের কণ্ঠ

ঘনিয়ে আসছে ঈদ। দুই দিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির পশু কিনতে এখন হাটে ছুটছে অনেক ক্রেতা। বিক্রেতাদের মুখেও হাসি ফুটেছে।

রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে শুধু দরদামই নয়, এখন টুকটাক কেনাবেচাও শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর দুই পশুর হাট ঘুরে মিলেছে এমন চিত্র।গতকাল ভাটারা সাঈদনগর অস্থায়ী পশুর হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সময় যত গড়াচ্ছে ভিড় ততই বাড়ছে। বিকেল হতেই পশুর হাটে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ক্রেতাদের উপস্থিতিতে খামারি ও ব্যবসায়ীদেরও মুখে হাসি ফুটেছে। তবে আগের

কয়েক দিনের তুলনায় মানুষের kalerkanthoউপস্থিতি বাড়লেও সে অনুযায়ী বিক্রি বাড়েনি। পাবনা থেকে ১৫টি গরু নিয়ে আসা আমান ব্যাপারী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সকাল থেকেই ক্রেতা আসছে। দরদাম জানতে চাচ্ছে। আজ প্রথম একটি গরু বিক্রি করেছি। ঈদের আগে আশা করি সব কটিই বিক্রি করে দিতে পারব। ’

এই বিক্রেতা জানান, সকালের হালকা বৃষ্টিতে কিছুটা কাদাপানি তৈরি হয়েছে। তাই হাঁটাচলায় হাটে আসা মানুষের একটু কষ্ট হয়েছে। তবে দুপুরের দিকেই ইজারাদার মাটি ও বালু দিয়ে কাদা সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন। খুব বেশি বৃষ্টি হলে হয়তো গরু নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হবে।

তবে হাট ভরা গরু দেখে ক্রেতারা আনন্দিত হলেও দরদামে খুশি হতে পারেনি তারা। সানোয়ার আলী নামে বাড্ডার এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আগেও দুই দিন এসেছিলাম হাটে। তখন গরু কম ছিল। আর মানুষের হাঁকডাকও তেমন ছিল না। আজ ছোট-বড় অনেক গরু পাওয়া যাচ্ছে, তাই ভালো লাগছে। তবে বিক্রেতারা দাম বেশি চাচ্ছেন। আজ নিতে পারব কি না বুঝতে পারছি না। হয়তো কাল নিতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘মাঝারি আকারের একটা গরু কিনব বলে চিন্তা করেছি। দেখি, যদি দামে কুলাতে না পারি হয়তো একটা ছোট গরুও নিতে পারি। ’

বিকেলে গাবতলী পশুর হাটের গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে বড় বড় গরু। এ ছাড়া হরেক নামের ষাঁড়। হাটের ডান দিকে বিক্রি হচ্ছে ছাগল, খাসি ও ভেড়া। হাটের মধ্যখানে দেখা মেলে মাঝারি আকারের গরু। আর হাটের শেষ মাথায় রাখা হয়েছে ছোট গরু। ক্রেতা ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাটে ছোট গরুর চাহিদা বেশি। বড় গরু বিক্রি সেভাবে হচ্ছে না। মিরপুরের বাসিন্দা মুসা আহমেদ হাটে আসেন গরু কিনতে। তিনি বলেন, ‘গরু কিনতে আরো এক দিন এসে ঘুরে গেছি। দাম বেশি চায়। লাখের নিচে কোনো গরু নাই। আমাদের পরিবার ছোট, মোটামুটি ৬০ থেকে ৭০ হাজারের মধ্যে কিনব। ’

কুষ্টিয়ার খামারি ইব্রাহিম মিয়া জানান, ‘হাটে ১০টি গরু তুলেছি। এখনো একটিও বিক্রি করতে পারিনি। অনেকে আসে, দাম করে, চলে যায়। গরুর পেছনে আগে যে খরচ হতো, এখন খরচ তার দুই গুণ বেশি। অনেক কাস্টমার দাম বলে, কিন্তু সেটা বেশি না। খরচ যে বেশি সেটা তারা বুঝতে চায় না। ’ দাম কম বললে বিক্রি করতে পারবেন না বলে জানান ইব্রাহিম। তিনি বলেন, ‘লাখ টাকার নিচে একটা গরুও ছাড়তে পারব না। কম বিক্রি করলে অনেক লস হয়ে যাবে। ’

দেখা গেছে, দুই হাটের কোনোটিতেই করোনা সচেতনতা নেই। সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকলেও স্বাস্থ্যবিধির দিকে নজর নেই কারো। বেশির ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে নেই মাস্ক। গাবতলীর হাটে কথা হয় গরু ব্যবসায়ী ফরিদ আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মাস্ক আছে তো। গরম লাগে, এ জন্য পকেটে রাখি। ইজারাদাররা আগেই কইছিল মাস্ক পইরা থাকতে হইবো। ’

হাটের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের এক সদস্য বলেন, ‘সার্বক্ষণিক মাইকে বলা হচ্ছে যাতে সবাই মাস্ক পরে থাকে। হাটে পশু নিয়ে আসা খামারি ও ব্যবসায়ীদের

পাশাপাশি ক্রেতাদেরও অনুরোধ করা হচ্ছে। অনেকে মানছে, অনেকে মানছে না। আমরা তো পরিবেশ ঠিক রাখতেই দিন পার করছি। আর কী করব?’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *