প্রচ্ছদ

ঈদের পর কমলো ইলিশ, মুরগি ও ডিমের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: ঈদের পর চালের দাম নতুন করে আর বাড়েনি। বিক্রেতারা বলছেন, বিধিনিষেধের কারণে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে এখন ক্রেতা কম।

যাঁরা ইলিশ পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য খবরটি স্বস্তির। রাজধানীর মাছের বাজারে ইলিশ মাছের দাম আগের তুলনায় কমেছে। এক কেজির চেয়ে কিছুটা বড় আকারের ইলিশ এখন বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। ঈদের আগে একই আকারের ইলিশ বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট, কাটাসুর বাজার, মিরপুর ১১ নম্বর সেকশন কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৮০০ গ্রাম বা এর চেয়ে কম ওজনের ইলিশের দাম কেজিতে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কমেছে। এই আকারের ইলিশ এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতো। এখন পাওয়া যাচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকায়। আর আধা কেজি বা এর কিছু বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে।

মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ আগের তুলনায় বেড়েছে। যে কারণে দাম কমেছে। আকারভেদে প্রতি কেজিতে ইলিশে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা কমেছে। তবে বিধিনিষেধের কারণে বাজারে ক্রেতা অনেক কম।

ইলিশ মাছের পাশাপাশি বাজারে মুরগি ও ডিমের দামও কমেছে। মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজারে গতকাল শুক্রবার ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঈদুল আজহার আগে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা ছিল। সোনালিকা (কক) মুরগির দামও কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে এখন ২১০ থেকে ২১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি মার্কেটের হজরত শাহ পরান ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা মো. হালিম মিয়া বলেন, কোরবানির ঈদের পর সাধারণত মুরগির ক্রেতা কমে যায়। এর সঙ্গে চলমান কঠোর বিধিনিষেধে কারণে বাজারে ক্রেতারা আসছেন কম। বিপরীতে বাজারে মুরগির সরবরাহ পর্যাপ্ত আছে। মূলত এ কারণেই দাম কমেছে।

মুরগির মতো ডিমের দামও কমেছে। কৃষি মার্কেটের পদ্মা ব্রয়লার হাউসে ফার্মের মুরগির ডিম হালি ৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ডজন কিনলে দাম পড়ে ৯২ থেকে ৯৫ টাকা। তবে ঈদের আগে এক ডজন ডিম ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি করার কথা জানান কৃষি মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. শাহিন ইসলাম।

বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির দামও কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে। মিরপুর ১১ নম্বর সেকশন কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. ইব্রাহিমের দোকানে করলা প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিছুদিন আগেও করলার কেজি ৮০ টাকা ছিল বলে জানান তিনি।

পটোল প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে। কৃষি মার্কেটে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী জিয়াউল হক বলেন, সবজির দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে।

করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ২৩ জুলাই দেশজুড়ে শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধের কারণে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো এখন সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত খোলা থাকছে। আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত কাঁচাবাজার এভাবেই চলবে। কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা সজল মিয়া বলেন, বাজারে ক্রেতা একেবারে নেই। বেচাবিক্রিও অনেক কম।

ঈদের আগে প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হওয়া চীনা আদার দামও কমেছে। কৃষি মার্কেট ও কারওয়ান বাজারে এক কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়। তবে রসুনের দাম আগের মতোই আছে। বিক্রেতারা আমদানি করা চীনা রসুন প্রতি কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৫ টাকা ও আলু ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঈদের পর চালের দামে নতুন করে আর বাড়েনি। কৃষি মার্কেট বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি বিআর-২৮ চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গুটি স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা, মিনিকেট ৫৮-৬০ টাকা এবং নাজিরশাইল ৬৫-৬৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *