ক্যারিয়ার ও চাকরিশিল্প ও বাণিজ্য

ই-কমার্সে ক্যারিয়ার গড়ার নতুন ক্ষেত্র দারাজ

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতক শেষ করে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মহসিন আলম। কিন্তু করোনা প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত চাকরির বাজার তার মতো নতুনদের জন্য কঠিন হয়ে ওঠে। অন্যদিকে, লকডাউনে বাসায় আটকে পড়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবাও তখন নিরুপায়।উপায়ন্তর না দেখে বন্ধুদের পরামর্শে অল্প পুঁজি নিয়ে ঘরে তৈরি জামা-কাপড় অনলাইনে বিক্রি শুরু করে মহসিন। প্রথম দিকে অল্প মানুষ দিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে অভাবনীয় সাড়া পান তিনি। কয়েক মাসের মধ্যেই মহসিন করোনায় হতাশাগ্রস্ত একটি পরিবারকে স্বাবলম্বী পরিবারে পরিণত করেন।
মহসিনের মতোই বর্তমান বাংলাদেশে লাখ লাখ মানুষ ই-কমার্স মার্কেটিং এর মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়া শুরু করেছেন। অর্থনৈতিকভাবে অগ্রসরমান বাংলাদেশের জন্য বর্তমানে নতুন একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে ই-কমার্স মার্কেটিং। নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি ই-কমার্স মার্কেটিং তরুণদের উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে উৎসাহিত করছে। ই-কমার্সের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের পরিচয় খুব বেশি দিন না হলেও অল্পদিনের মধ্যেই ই-কমার্স মার্কেটিং শুরুর দিকে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে।
এক্ষেত্রে, সাধারণ মানুষের কাছে ই-কমার্সের গ্রহণযোগ্যতা, আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছে দারাজ।
বাংলাদেশে দারাজের পথচলা শুরু হয় ২০১৪ সালে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দারাজ বাংলাদেশে ই-কমার্স বান্ধব একটি পরিবেশ তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করেছে। দারাজের অবকাঠামো, পদ্ধতি, প্রযুক্তিসহ যাবতীয় বিষয়াবলী পরিচালিত হয় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আলিবাবার তত্ত্বাবধানে। দারাজের অ্যাপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি হওয়ায়, ব্যবহারকারীর পছন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পেতে সহজ হয়। দেশব্যাপী ৬৪টি জেলার প্রত্যেকটি অঞ্চলে দারাজের ডেলিভারি ব্যবস্থা থাকায় শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামের মানুষরাও কম সময়ে ঘরে বসে স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের পছন্দের পণ্য পেয়ে যাচ্ছেন।
উন্নত প্রযুক্তি ও সেবা নিশ্চিত করায় দারাজের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ধীরে ধীরে ই-কমার্সের গ্রহণযোগ্যতাও বাড়তে শুরু করে। এর ফলে, বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যবস্থা গড়ে ওঠা সহজ হয়ে ওঠে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে শিক্ষার হার বাড়লেও সেই হারে কর্মসংস্থান বাড়েনি। এর ফলে, দেশে হতাশাগ্রস্ত শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। এমন বাস্তবতায়, দারাজ বাংলাদেশে একটি সম্ভাবনাময় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার ৫০০ মানুষ দারাজে কাজ করে।

পণ্য বিক্রেতাদের পাশাপাশি অনেকেই এখন ডেলিভারি ম্যান হিসেবে দারাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কোনো পুঁজি ছাড়াই পণ্য ডেলিভারি দিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। শুধু শিক্ষিত বা তরুণরাই নয়, সব শ্রেণির সব বয়সের মানুষেরাই এখন দারাজে বিক্রেতা হিসেবে বা ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে যাচ্ছেন। দারাজকে বর্তমান বাংলাদেশের ই-কমার্সের সবচেয়ে বড় মার্কেটপ্লেস হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

প্রতিদিন দারাজ থেকে প্রায় দেড় লাখের বেশি পণ্য ডেলিভারি দেওয়া হয়। উন্নত প্রযুক্তির অনলাইন সেবা, সারা দেশব্যাপী দ্রুত ও নিরাপদ ডেলিভারি ব্যবস্থা, মহসিনের মতো লাখ লাখ মানুষের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য দিকগুলো দেশের মানুষের কাছে দারাজের পাশাপাশি ই- কমার্সের গ্রহণযোগ্যতাকে দৃঢ় করেছে। তাই, বাংলাদেশের ই-কমার্সের অগ্রযাত্রায় দারাজকে একটি মাইলফলক হিসেবে ধরা যায়। সূত্র: বাংলানিউজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *