আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনে সৌদি জোটের হামলায় নিহত ২৬৪


যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলের তেল-গ্যাস সমৃদ্ধ মারিব অঞ্চলে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় ২৬০ জনের বেশি হুথি সদস্যের প্রাণহানি ঘটেছে। দেশটির কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ মারিবে গত তিন দিনে হামলায় বিদ্রোহীগোষ্ঠী হুথিদের এই প্রাণহানি ঘটেছে বলে রোববার সৌদি জোটের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
জোটের বরাত দিয়ে সৌদি প্রেস অ্যাজেন্সি (এসপিএ) বলছে, মারিবের ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণের আল-জাওবা এবং আল-কাসসারার ৩০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে হামলায় বিদ্রোহীদের ৩৬টি সামরিক যানবাহন ধ্বংস এবং ২৬৪ জনের বেশি হুথি সদস্য নিহত হয়েছেন।
ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী সৌদি জোটের হামলায় হতাহতের ব্যাপারে খুব কমই মন্তব্য করে এবং ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি নিহতের সংখ্যা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি।
গত দুই সপ্তাহের প্রায় প্রত্যেকদিনই তেল সমৃদ্ধ উত্তর ইয়েমেনে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত দেশটির সরকারের সর্বশেষ ঘাঁটি মারিবের চারপাশে হামলার খবর দিয়ে আসছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। হামলায় শত শত হুথি বিদ্রোহী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি জোট।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একবার মারিব দখলে অভিযান চালিয়েছিল হুথিরা, কিন্তু সেবার বিপুলসংখ্যক যোদ্ধার প্রাণহানি হওয়ায় কয়েক মাস স্থগিত ছিল তাদের সেই দখল অভিযান। গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইয়েমেনের পূর্বাঞ্চলের মারিব প্রদেশ হুথি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
সোদি জোট বলছে, হুথিদের দখলে যাওয়ার পর থেকে এই প্রদেশে বেসামরিক নাগরিকদের চলাচল এবং মানবিক ত্রাণ সহায়তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।
অভিযানের শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।
ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ‘ছায়াযুদ্ধ’ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং এক সময়ের স্বচ্ছল এই দেশ।
জাতিসংঘ বলছে, ইয়েমেনের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ খাদ্য ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের গুরুতর সংকটে ভুগছেন।
সূত্র: এএফপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *