Uncategorized

ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা | রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানেও দাওয়াত পাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিরা খেলাপি ঋণ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবেন না বলে নতুন বিধান যুক্ত করে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধিত খসড়া তৈরি করেছে অর্থমন্ত্রণালয়।

আগের খসড়ায় ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি ব্যক্তিদের বিজনেস ক্লাসে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা ছিল, এবার তা আরও কঠোর করা হয়েছে। সংশোধিত খসড়া অনুযায়ী, ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিরা বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না। ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বাড়ি, গাড়ি, কোম্পানি নিবন্ধন এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়া ও কোনো সংগঠনে পদ না পাওয়ার নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব বহাল রয়েছে।

এর আগে ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন সংশোধনের প্রাথমিক খসড়ায় ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়। দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ আইনে পরিচালিত হয়।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ধারা আরও কঠোর করার পরামর্শ দিলেও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের মতামত ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রাথমিক খসড়ার কিছু ধারা শিথিল করা হয়েছে। খসড়াটি চূড়ান্ত করে মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।

সংশোধিত খসড়ায় বলা হয়েছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটি ওই তালিকা চূড়ান্ত করার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবে এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। তবে ব্যাংক পরিচালকদের খেলাপি করার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে চিহ্নিত বিদ্যমান আইনের ১৭ ধারায় কোনো পরিবর্তন না আনায় সংশোধিত খসড়া আইনে রূপান্তর হলে ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান পরিচালকদের ঋণ খেলাপি বা ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে সম্ভব হবে না।
এ ধারায় বলা আছে, কোনো ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করলে ঋণদাতা ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণগ্রহীতা পরিচালককে নোটিশ দেবে। ওই নোটিশ দেওয়ার দু’মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করলে ঋণগ্রহীতা পরিচালক খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন।

বর্তমানে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একই পরিবারের চারজন একসঙ্গে পরিচালক হতে পারেন। তবে ব্যাংক কোম্পানি আইনে পরিবারের আওতা ছোট হওয়ায় এক পরিবার থেকে অধিক সংখ্যক পরিচালক হতে পারছে। এজন্য প্রথম খসড়ায় পরিবারের সংজ্ঞায় স্বামী, স্ত্রী, পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা, ভাই, বোন ও তাদের ওপর নির্ভরশীলদের কথা আছে। প্রাথমিক খসড়ায় এদের সঙ্গে জামাতা, পুত্রবধু, শ্বশুর, শাশুড়ি ও তাদের ওপর নির্ভরশীলদের কথা বলা ছিল, যা সংশোধিত খসড়ায় নেই।

অবশ্য ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনের সংশোধিত খসড়ায় পরিবারের তালিকায় স্বামী, স্ত্রী, পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা, ভাই, বোন, জামাতা, পুত্রবধু, শ্বশুড়, শাশুড়ি ও তাদের ওপর নির্ভরশীলদের কথা বলা আছে।

ব্যাংক পরিচালকদের খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করতে না পারার বিদ্যমান দুর্বলতা বহাল রাখা হয়েছে। প্রথম খসড়ায় অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে ব্যাংকের উপরের দুই স্তর বা জেনারেল ম্যানেজার পর্যন্ত কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করার ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়ার কথা বলা হলেও সংশোধিত খসড়ায় তা বাতিল করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *