আন্তর্জাতিকসর্বশেষ

ইকুয়েডরে কারাগারে দাঙ্গায় নিহত বেড়ে ১১৬


দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের কারাগারে ভয়াবহ দাঙ্গায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসসো এই তথ্য জানান। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট গুইলারমো ওই কারাগারে নিরাপত্তা বাহিনীর আরও বেশি সংখ্যক সদস্য পাঠনোর ঘোষণা দিয়েছেন। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে দেশের কারাগারগুলোতে প্রাণঘাতী দাঙ্গা এড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়ের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
রয়টার্স জানিয়েছে, ইকুয়েডরের গুয়াইয়াস প্রদেশের গুয়াইয়াকুইল শহরের পেনিটেনসিয়ারিয়া দেল লিটোরাল কারাগারে এই সহিংস দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখানে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর ভেতরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার রাতে হওয়া ওই সংঘর্ষের পর বুধবার তাৎক্ষণিকভাবে ২২ জন নিহতের কথা জানানো হলেও সময় পার হওয়ার সাথে সাথে নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এটি নিয়ে চলতি বছর দেশটির কারাগারে তৃতীয়বারের মতো প্রাণঘাতী দাঙ্গার ঘটনা ঘটল। সর্বশেষ এই দাঙ্গায় ১১৬ জন নিহতের পাশাপাশি আরও ৮০ জন বন্দি আহত হয়েছেন।
দেশের সবচেয়ে বড় শহর গুয়াইয়াকুইলে বুধবার ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসসো সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দের কারণে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো কারাগারগুলোকে কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে। মহান সৃষ্টিকর্তা ইকুয়েডরের ভালো করুন যেন আমরা প্রাণহানির সংখ্যা এড়াতে পারি। এটিই আমার প্রার্থনা।’
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, কারাগারের জানালা থেকে গুলি ও বিস্ফোরক ছুড়ছেন কয়েদিরা। গুয়াইয়াকুইলের প্রধান পুলিশ কর্মকর্তা ফাউস্তো বুয়োনানো এএফপিকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের সংঘাতে অ্যাসল্ট রাইফেল, পিস্তল, গ্রেনেড ও ধারাল অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে কারারক্ষীদের।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে মেক্সিকো হয়ে মাদকের যেসব চালান যুক্তরাষ্ট্র যায়, সেগুলোর প্রধান রুট হিসেবে গত কয়েক বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে ইকুয়েডর। বিপুল ঝুঁকি এবং একই সঙ্গে প্রচুর অর্থ থাকায় এ কারণে ইকুয়েডরের বন্দর এলাকাগুলোতে প্রভাব বাড়ছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের, যারা কোনো না কোনোভাবে মাদক চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত।
গুয়াইয়াকুইল ইকুয়েডরের প্রধান বন্দর শহর হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই শহরটিতে এসব গ্যাংয়ের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি।
দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- মাদক, বিশেষ করে কোকেনের চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ততার অভিযোগে নিয়মিত এসব সন্ত্রাসী গ্যাংয়ের সদস্যদের গ্রেফতার করছে পুলিশ; এবং তাদের প্রভাবে দেশের কারাগারগুলো দিন দিন যুদ্ধক্ষেত্রে রূপান্তরিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *