কৃষি-মৎস্য

ইউটিউব দেখে চায়না কমলার চাষ || লাভবান হলেন ঝিনাইদহের কলেজ ছাত্র

ডেস্ক প্রতিবেদন, ধূমকেতু বাংলা: ইউটিউব দেখে চায়না কমলা চাষ করে সাড়া ফেলেছেন রিফাত হোসেন নামে এক কলেজ ছাত্র। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াবাকড়ি গ্রামে গিয়ে চোখে পড়ে এ দৃশ্য।

সারি সারি চায়না কমলা গাছ। গাছের সবুজ পাতার রং ছাপিয়েছে যেন হলুদ কমলা। সবুজ পাতার মধ্যে হলুদ ফলের উঁকি যে কারো দৃষ্টি কাড়ে। সদর উপজেলার পোড়াবাকড়ি গ্রামে গেলে দেখা মিলবে এ দৃশ্যের। সুস্বাদু এ ফলের ভারে নুয়ে পড়ার মতো অবস্থা প্রতিটি গাছের। যা দেখতে ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন উৎসুক মানুষ। বাগান দেখে মুগ্ধতার কথা জানান তারা। থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা রসে ভরপুর কমলা সুমিষ্ট কিনছেনও তারা।

৩ বছর আগে ইউটিউবে কমলালেবুর চাষ দেখে নিজের ১ বিঘা জমিতে দেড়’শ চারা রোপন করেন রিফাত হোসেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শে নিয়মিত পরিচর্যা আর পরিমিত সারের ব্যবহার করে এ বছর ফলন পেতে শুরু করেছেন তিনি। ফলন আর দাম ভালো পেয়ে লাভের মুখ দেখছেন তিনি।

বিদেশ থেকে আমদানি করা ফরমালিন কিংবা রাসায়নিক মেশানো মাল্টায় যখন আস্থা হারিয়েছে মানুষ সেই সময় স্বাস্থ্যসম্মত ফল পেয়ে খুশি ক্রেতারা।

হাটগোপালপুর থেকে কমলাবাগান দেখতে আসা শাহরিয়ার নাজিম জনি জানান, ফেসবুক থেকে বাগানটা সর্ম্পকে জেনেছি। তাই এখানে বেড়াতে এলাম। এই বাগানটা দেখতেও খুব সুন্দর এবং কমলাগুলো খেতে খুব মজার। বাইরের কমলার থেকে আমাদের এখানে যে কমলা চাষ হচ্ছে সেটা  অনেক মিষ্টি। এই বাগানে এসে আমি চার কেজি কমলা কিনেছি।

কমলাবাগান দেখতে আসা সাইফুল ইসলাম জানান, এতো সুন্দর একটি বাগান, মনে হচ্ছে আমরা বিদেশে কোথাও আছি। দেশের মধ্যে আছি এটা মনেই হচ্ছে না। কমলার স্বাদও চামৎকার। আসলে ন্যাচারল খাবার খাওয়ার মজাই আলাদা।

রিফাত হোসেন জানান, আমি প্রথমে মাল্টা লাগাই, আমাদের কৃষি অফিসারও সেই ভাবে পরিচর্যা জানেন না। পরে আমি ইউটিউবে দেখি আমাদের দেশে চায়না কমলার চাষ হচ্ছে। তারপর শুরু করলাম চায়না কমলা চাষ, এর ফলনও খুব ভালো হচ্ছে, দেখলাম একটা গাছে ৩০ থেকে ৪০ কেজি ফল পাওয়া যাচ্ছে। এরপর থেকে আমি কিছু চারা সংগ্রহ করে এক বিঘা জমিতে কমলা চাষ শুরু করলাম। আমার চারার জন্য খরচ হয়েছিল ২২ হাজার টাকা এবং লোকজন দিয়ে লাগানোর পর ফল ধরার আগ পষর্ন্ত খরচ হয় ৩৫ হাজার টাকা। তারপর ৩ বার সার দিয়েছি, গত ফেব্রুয়ারিতে গাছে ফল ধরছে। আমাদের গাছে যে ফল ছিল তা এখন এখন পষর্ন্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। আশা করা যায় বাজার ভালো থাকলে আরো ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার ফল বিক্রি করতে পারবো।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম বলেন, আমাদের এখানকার মাটি চায়নিজ কমলা তৈরির উপযোগী। ৩ বছর আগে পোড়াবাকড়ি গ্রামে কলেজ ছাত্র রিফাত হোসেন নামের এক কৃষক ভাই আমাদের সহযোগিতায় ১ বিঘা চায়না কমলার বাগান করেছেন, এ বছর তিনি বাগান থেকে প্রচুর পরিমাণ ফল পেয়েছেন। লেবু জাতীয় ফলের জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি ফলন ভালো পেতে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে প্রতিনিয়িত দেওয়া হচ্ছে প্রযুক্তি ও নানা পরামর্শ ও সহযোগিতা।

আরো পড়ুন:

মধু চাষ করে টাঙ্গাইলে চাষিদের বাড়তি আয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *