প্রচ্ছদ

ইউটিউব গ্রাম!

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: ইন্দোনেশিয়ার মধ্য জাভার একটি ছোট গ্রাম কাসেগেরান। এই জনপদ এতটাই ছোট এবং প্রত্যন্ত যে জাভার মানচিত্রে দূরবীন দিয়ে খুঁজলেও এর সন্ধান মেলা ভার। কিন্তু ইন্টারনেটে জাঁকিয়ে বসেছে এই গ্রাম। এই গ্রামের পিছিয়ে থাকা মানুষগুলো ক্রমে ইন্টারনেটের পরিচিত মুখ হয়ে উঠছেন।

কাসেগেরান নামের সঙ্গে বিশ্বের পরিচিতি নেই ঠিকই, কিন্তু ‘ইউটিউব ভিলেজ’ বা ‘ইউটিউব গ্রাম’ বলতে একনামেই বুঝে ফেলা যায় কোন জায়গার কথা হচ্ছে। কাসেগেরানেরই নতুন নামকরণ হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার ‘ইউটিউব গ্রাম’।

এই গ্রামই সম্প্রতি নতুন নতুন ইউটিউব তারকার জন্ম দিতে শুরু করেছে। গ্রামের মানুষ নিজেদের পেশা বদলে ইউটিউবে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। যাতে গ্রামের সার্বিক আর্থিক উন্নয়নও হয়েছে।

এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ মূলত চাষাবাদ করেই উপার্জন করে থাকেন। এর বাইরে টুকটাক কাজ করেন। ফলে গ্রামে বেশিরভাগই দরিদ্র পরিবারের বাস।

এই গ্রামেরই একজন অধিবাসী সিশ্বানতো। তিনি মোটরসাইকেলের মিস্ত্রি। একটি মোটরসাইকেল মেরামতির দোকানে কাজ করেন তিনি। কিন্তু দিনভর পরিশ্রম করে যা উপার্জন করেন, তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছিল।

সিশ্বানতো একদিন স্থির করে ফেললেন মোটরসাইকেল মেরামতির যে দক্ষতা তার রয়েছে, তা দিয়েই ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে আপলোড করবেন।

সেই শুরু। তখন ভাল ফোন ছিল না কাছে। তার উপর এই প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট ঠিকমতো কাজ করে না। অনেক বাধা পেরিয়েই ইউটিউব-যাত্রা শুরু হল তার।

পরে ইউটিউব থেকে উপার্জনের টাকা দিয়েই ভাল মোবাইল ফোন কিনে নেন। ইউটিউব যে উপার্জনের মাধ্যমে হতে পারে, তা কখনও কল্পনাতেও আনেননি তিনি।

একা সিশ্বানতোই নন, তার মতো এই গ্রামের আরও অনেকেই ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করতে শুরু করেছেন। শুরুটা অবশ্য করে দিয়েছিলেন সিশ্বানতোই।

এর জন্য তাদের দৈনন্দিন জীবনের বাইরে বেরিয়ে আলাদা করে কিছু করতেও হয় না। যিনি চাষাবাদ করেন, তিনি সেটাই ভিডিও করে ইউটিউবে পোস্ট করে দিচ্ছেন। যিনি গ্রামের ছেলেমেয়েদের টিউশন পড়ান, তিনিও সেটা তুলে ধরছেন ইউটিউবে।

ইন্টারনেটের সমস্যার জন্য অনেক বাধার সম্মুখীনও হতে হয় তাদের। তার উপর ভাল ক্যামেরা না থাকায় সব সময় ঠিক মতো ভিডিও করে উঠতে পারেন না তারা।

তা বলে হাল ছাড়ে না কাসেগেরান। ইউটিউবের হাত ধরেই মানচিত্রে নিজের জায়াগটুকু করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জাভার এই প্রত্যন্ত গ্রাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *