নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: বাংলাদেশ আজ বিশ্বে যে মর্যাদার আসনে পৌঁছেছে, তা ধরে রেখে আরও এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে যে পরিকল্পনা তার সরকার নিয়েছে, তাতে বাংলাদেশ আর কখনো ‘পথ হারাবে না’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ আজকে বিশ্বে একটা মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে এসেছে। এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
এক যুগের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়ে আসা আওয়ামী লীগ কীভাবে দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা সাজিয়েছে তা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে তার ভিত্তিতে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ধরে দেশের উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন ২০৪১ সাল পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা তৈরি করে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
“কাজেই এটা ধরে এগোতে পারলে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।”
শতবছরের ‘ডেল্টা প্ল্যান’ এর কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ একটা ব-দ্বীপ। এই ব-দ্বীপের জনগণ, বংশপরম্পরায় যারা আসবে, আগামী প্রজন্ম যারা আসবে, তারা যেন একটা সুন্দর জীবন পায়। সেই পরিকল্পনার কাঠামো তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছি। সেটাও আমরা করেছি এবং সেটা আমরা বাস্তবায়ন করছি।”
ডেল্টা প্ল্যানের আওতায় ৮০টি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “রাজধানীর সাথে সমগ্র বাংলাদেশের যোগাযোগ নেটওয়ার্ক আমরা তৈরি করে দিচ্ছি। কাজেই বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে যে পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা আমরা পরিচালনা করছি, তার ফলে এই বাংলাদেশ আর কখনো পথ হারাবে না।
“বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে জাতির পিতা যে আদর্শ দিয়ে গেছেন, সেই আদর্শ নিয়ে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে তার অভীষ্ঠ লক্ষ্য অর্জনের জন্য।”
‘বাংলাদেশে আসুন, বিনিয়োগ করুন’
প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান অনুষ্ঠানে বলেন, “একশ’টা অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। অনেকদিন তো এদেশে ছিলেন। বাংলাদেশে আসেন, বিনিয়োগ করেন।”
ব্রিটেনে যারা রেস্তোরাঁ ব্যবসা করেন, বাংলাদেশ থেকে তাদের বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্য নিয়ে যেতে হয়। সে বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আপনারা কিন্তু সেখানে তরিতরকারি, শাকসব্জি, মাছ-মাংস উৎপাদন করতে পারেন। সেগুলোর সাথে আধুনিক পদ্ধতিতে ভ্যালু অ্যাড করতে পারেন এবং এটা নিয়ে আসতে পারেন- রেডি টু কুক অর রেডি টু ইট।”
সেই কাজটি সহজ করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের তথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা নতুন বিমান কিনে দিয়েছি। আমরা আগামীতে কার্গো বিমানও কিনে দেব।… কোন সব্জিটা, কোন মাংসটা কত তাপমাত্রায় রাখলে তার খাদ্যগুণ নষ্ট হবে না- সেইভাবে চেম্বার করে দিয়ে সেইভাবে আমরা কার্গো ভিলেজ করে দেব। আপনার কোনো জিনিস রপ্তানি করতে আর সমস্যা হবে না।”
প্রবাসীদের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অর্থনৈতিক অঞ্চলে যারা বিনিযোগ করতে চান,… বিশেষ সুবিধা পাবেন। বিশেষ করে আমাদের প্রবাসী যারা, তাদের জন্য আরো আলাদাভাবে বিশেষ সুবিধা আমরা দেব, যাতে সেখানে বিনিয়োগটা আরো ভালোভাবে হয়।”
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ভীত না হয়ে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
আরো পড়ুন: