নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: যদি এমনটা হয় যে, ডিজিটাল বুথের মনিটরে ক্লিক করলেই মিলবে জমির খতিয়ান। তাহলে কেমন হয়! এমনটাই হতে যাচ্ছে কয়েক মাসের মধ্যে। ডিসি অফিস এবং শপিংমলসহ জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে এই বুথ স্থাপন করা হবে। জমির মালিকানা স্বত্বের গুরুত্বপূর্ণ সনদ হলো ‘খতিয়ান’। এই খতিয়ান পেতে বর্তমানে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় এবং ভূমি অফিসে নগদ অর্থকড়ি ব্যয় করতে হয় বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
“মাঠপর্যায়ে ভূমি অফিস থেকে খতিয়ান পেতে যাতে জনগণের ভোগান্তি না হয় , সেজন্য উন্নত দেশের মতো ডিজিটাল বুথের মাধ্যমে খতিয়ান সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। যেভাবে বিদেশে ইলেকট্রিক বুথের মাধ্যমে বাস-ট্রেনের টিকিট কাটা হয়, এটিও সম্পন্ন হবে একই পদ্ধতিতে। বুথের মনিটরে নির্ধারিত বাটনে ক্লিক করে প্রথমে নিজ জেলা ও উপজেলা সিলেক্ট করতে হবে। এরপর মৌজা ও দাগ নম্বর লিখে খতিয়ানের ঘরে চাপ দিলে সংশ্লিষ্ট জমির খতিয়ানের শিট প্রিন্ট হয়ে বের হয়ে আসবে। এজন্য প্রথমে ২০ টাকা দিয়ে বুথের মনিটর ওপেন করতে হবে। অর্থাৎ খতিয়ানপ্রতি এই হারে টাকা নেয়া হবে। যার মধ্যে ইউসিবি ব্যাংকের সার্ভিস চার্জ যুক্ত। সম্পূর্ণ ঝামেলামুক্তভাবে যে কেউ তার নিজের জমির খতিয়ান দেশের যে কোনো বুথ থেকে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন।”
আরও পড়ুন: অনুমতি ছাড়া গ্রামেও কৃষি জমিতে ঘর করা যাবে না: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
জানা গেছে, “শিগগিরই এ বিষয়ে ইউসিবি ব্যাংকের সঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ডিজিটাল খতিয়ান বুথের যাত্রা শুরু হবে।”
ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, “ভূমি ব্যবস্থাপনায় জমির খতিয়ান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জমির মালিকানা প্রমাণে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দালিলিক প্রমাণপত্র। জমি কেনাবেচা ও অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও এটি প্রয়োজন হয়।”
খতিয়ান বা পর্চা ৪ ধরনের হয়ে থাকে। সিএস, এসএ, আরএস খতিয়ান এবং বিএস বা মহানগর জরিপ। ১৮৭৫ থেকে ১৮৮৫ সালের বিটি অ্যাক্টের বিধান মতে, জমিদারদের অধীনে প্রণীত খতিয়ানকে সিএস এবং ‘জমিদারি অধিগ্রহণ প্রজাস্বত্ব আইন-১৯৫০’ এর ভিত্তিতে ১৯৫৬ -৬২ সালে একটি জরিপ করা হয়। যার নাম ‘এসএ খতিয়ান’।
এছাড়া ১৯৬৫ সাল থেকে পরবর্তী ২০ বছরের মধ্যে সরকার সারা দেশে সংশোধনী জরিপ নামে যে সার্ভে পরিচালনা করে তাকে ‘আরএস খতিয়ান’ বলে। সর্বশেষ মহানগর জরিপও সম্পন্ন হয়েছে। তবে ডিজিটাল বুথ থেকে সেবাগ্রহীতাকে সংশ্লিষ্ট জমির হালনাগাদ খতিয়ান সরবরাহ করা হবে।
সূত্র জানায়, “ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার আওতায় ইতোমধ্যে সাড়ে ৪ কোটি খতিয়ান ডিজিটাল ডেটাশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি নামজারিসহ খতিয়ান অন্তর্ভুক্তির কাজও এগিয়ে চলছে।”
