আন্তর্জাতিক

‘আমরা ২০ বছর আগের তালেবান নই’



কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর মঙ্গলবার প্রথমবার সংবাদ সম্মেলন করেছে তালেবান।

আফগানিস্তান নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গনি সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানোর পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, ‘বিশ বছর আগেও আমাদের দেশ মুসলিম রাষ্ট্র ছিল। আজও আমাদের দেশ মুসলিম রাষ্ট্র।’

মুজাহিদ বলেন, ‘কিন্তু অভিজ্ঞতা, পরিপক্কতা এবং দৃষ্টিভঙ্গির বিচারে বিশ বছর আগের তালেবানের সাথে আজকের তালেবানের বিশাল তফাত রয়েছে। আমরা এখন যেসব পদক্ষেপ নেব তার সাথে ওই সময়কার তফাত রয়েছে। আর এটা বিবর্তনের ফসল।’
‘আমরা ২০ বছর আগের তালেবান নই’
‘আমরা ২০ বছর আগের তালেবান নই’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‌‘দীর্ঘ ২০ বছর সংগ্রামের পর আমরা দেশকে মুক্ত করেছি ও বিদেশিদের তাড়িয়ে দিয়েছি। এটা পুরো জাতির জন্য গর্বের মুহূর্ত। আমরা বিদেশি কিংবা অভ্যন্তরীণ শত্রু চাই না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই আফগানিস্তান আর সংহিংসতা-যুদ্ধক্ষেত্র থাকবে না। যারা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তাদের সবাইকে আমরা ক্ষমা করে দিয়েছি। শত্রুতা শেষ হয়ে গেছে। আমরা কোন বিদেশি কিংবা অভ্যন্তরীণ শত্রু চাই না।’

জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করতে চাই যে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কোনো সমস্যা করতে চাই না। আমাদের ধর্মীয় নীতি অনুসারে কাজ করার অধিকার আমাদের আছে।’

আফগানিস্তান আল-কায়েদা যোদ্ধাদের আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠার ঝুঁকি আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মুজাহিদ এই উত্তর দেওয়ার পর এ ব্যাপারে তালেবানের কঠোর অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আমরা এই নিশ্চয়তা দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের বিভিন্ন পন্থা, নিয়ম-কানুন আছে। অন্যদের মতো আমাদেরও (আফগানদের) মূল্যবোধ অনুযায়ী নিজস্ব নিয়ম-কানুন থাকার অধিকার রয়েছে। আমরা শরিয়াহ আইনের অধীনে নারীদের অধিকারের প্রতি সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।’

নারীদের অধিকার প্রসঙ্গে তালেবানের নীতি নিয়ে এসব জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তারা (নারীরা) আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে যাচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করতে চাই যে কারো মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকবে না।’

সরকার গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার গঠনের পর আমরা সিদ্ধান্ত নেব যে জাতির সামনে কোন আইন উপস্থাপন করা হবে। শুধু এটা বলতে চাই, আমরা সরকার গঠনে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছি। এটি শেষ হওয়ার পরে এ বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হবে।’

বিদেশিদের সাথে কাজ করা ঠিকাদার এবং দোভাষীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘কারও ওপর কোনো প্রতিশোধ নেওয়া হবে না। যে তরুণ এখানে বড় হয়েছে, আমরা চাই না তারা চলে যাক। তারা তো আমাদের সম্পদ।’

জাবিউল্লাহ মুজাহিদ আরও বলেন, ‌‘আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য আমরা সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছি। আমাদের যোদ্ধা, আমাদের জনগণ, সব পক্ষ, সব উপদল, সবার অন্তর্ভুক্তি আমরা নিশ্চিত করব। সবাইকে নিয়েই দেশ পরিচালিত হবে।’

/জেড এইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *