নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: আফগানিস্তান থেকে তিন বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হয়েছে। বাকিদের ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে। আফগানিস্তানে কোনো বাংলাদেশি অসুবিধায় থাকলে দূতাবাসে যোগাযোগ করলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।
আজ সোমবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম কয়েকটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আফগানিস্তানে স্থায়ী সরকার এলে বাংলাদেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তৃতীয় কোনো দেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আফগানিস্তানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। আঞ্চলিক সমৃদ্ধির জন্য আমরা চাই আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। আফগানিস্তানের মানুষের অনেক সক্ষমতা আছে। তারা সেটি ব্যবহার করে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।
সে বিষয়ে বাংলাদেশ সার্বিক সহযোগিতা করবে। আমরা সে জন্য প্রস্তুত আছি, তবে সে জন্য স্থায়ী সরকারের প্রয়োজন। সামনের দিনে যখন আমরা বুঝব একটি স্থায়ী সরকার এসেছে, আমরা তখন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব।’
আফগানিস্তানে বাংলাদেশিদের যাতায়াতে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেবেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের এমন প্র্যাকটিস নেই। স্বাভাবিকভাবে যে দেশের আইনশৃঙ্খলা ভালো নয়, সে দেশে বাংলাদেশের মানুষ যাবেন না। এটা নতুন করে বলার কিছু নেই। আমরা লিখিতভাবে না বললেও আমরা নিরুৎসাহিত করব আফগানিস্তানে যেতে। তাদের সংবিধান অনুযায়ী স্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও সরকার শপথ নিলে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সিদ্ধান্ত নেবে।’
এদিকে, এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফগানিস্তানের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ, যা আঞ্চলিক বা তার বাইরেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে। ‘দক্ষিণ এশিয়ার সমৃদ্ধিতে একত্রে কাজ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে নীতি রয়েছে, সেটি বাস্তবায়নে আফগানিস্তানের সঙ্গে কাজ করতে বাংলাদেশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
‘বাংলাদেশ মনে করে, দেশটির জনগণের পছন্দ অনুযায়ী একটি গণতান্ত্রিক ও বহুমুখী দেশ হলে তা আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্য সহায়ক হবে। বাংলাদেশ নিজেকে আফগানিস্তানের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সহযোগী ও বন্ধু বলে মনে করে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, পয়ঃনিষ্কাশন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ মোকাবিলা ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ জ্ঞান বিনিময় করার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থাগুলো এসব কাজ গত ২০ বছর ধরে দেশটিতে করে আসছে।’
‘বাংলাদেশ মনে করে, আফগানিস্তানের পুনর্গঠন এবং কোন দিকে তারা যাবে, তা পুরোপুরি নির্ভর করে দেশের জনগণের ওপর। আফগানিস্তানকে একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ আর দক্ষিণ এশিয়া ও বিশ্বের জন্য অবদান সৃষ্টিকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ দেখতে চায়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে আফগান জনগণের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ।’
সেইসঙ্গে আফগানিস্তানের সব পক্ষকে শান্তি রক্ষা এবং সব বিদেশি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ।