আন্তর্জাতিক

আফগানিস্তানে দাড়ি কাটায় নিষেধাজ্ঞা

আফগানিস্তানে দাড়ি শেভ বা ছাটাইয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান। দেশটির হেলমান্দ প্রদেশের নাপিতদের ওপর এ বিষয়ক একটি নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে গোষ্ঠীটি। এছাড়া কাবুলের নাপিতদেরও একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে নাপিতরা এখন থেকে কারও দাড়ি শেভ বা কেটে দিতে পারবেন না।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তালেবান বলছে, দাড়ি শেভ বা ছাটাই করা ইসলাম পরিপন্থি।
এদিকে তালেবানের পুলিশ বাহিনী জানিয়েছে, এই আইন কেউ অমান্য করলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। বিবিসি জানিয়েছে, তালেবান প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাড়ি কাটা বিষয়ক এই ধরনের আদেশ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন কাবুলের কিছু সংখ্যক নাপিতও।
তালেবানের এই নির্দেশনার কারণে গোষ্ঠীটির আগের মেয়াদের কট্টরপন্থি শাসনের শঙ্কা ফিরছে মানুষের মনে। যদিও আগস্টে কাবুল দখল করার পর থেকে অতীতের তুলনায় উদারভাবে দেশ পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিল তালেবান।
বিবিসি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশের সেলুনগুলোতে একটি করে নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে তালেবান। সেখানে চুল ও দাড়ি কাটার ক্ষেত্রে নাপিতদেরকে শরীয়া আইন অনুসরণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সেলুনগুলোতে টাঙানো এসব নোটিশ বিবিসি দেখেছে এবং পড়েছে। নোটিশে বলা হয়েছে, ‘(তাদের এই আদেশের বিরুদ্ধে) অভিযোগ করার অধিকার কারও নেই।’
রাজধানী কাবুলের একজন নাপিত বিবিসি বলেন, ‘তালেবান যোদ্ধারা প্রায়ই আসছেন এবং দাড়ি কাটা বন্ধ করতে আদেশ দিচ্ছেন। এমনকি তাদেরকে ধরতে সাদা পোশাকে ইন্সপেক্টরও পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যোদ্ধারা।’
এদিকে কাবুলের সবচেয়ে বড় সেলুনগুলোর একটির একজন নাপিত বলেন, তালেবান সরকারের কর্মকর্তার পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি ফোন পেয়েছেন। ফোনে তাকে আমেরিকান স্টাইল বন্ধ করতে এবং কারও দাড়ি শেভ বা ছাটাই করতে নিষেধ করা হয়েছে।
এদিকে তালেবানের এই নির্দেশনার পর নিজেদের জীবন ও উপার্জন নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে পড়েছেন আফগান নাপিতরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের অনেকেই নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
এক নাপিত বিবিসিকে বলেন, ‘আফগানিস্তানের ফ্যাশন সেলুন ও এ সংক্রান্ত কাজ ও পেশাগুলো নিষিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে আমি এই কাজ করছি। আমার মনে হয় না এই কাজ আমি আর অব্যাহত রাখতে পারবো।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *