নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: আদাকে বলা হয় “সব ওষুধের দাদা”। আদার উপকার বলে শেষ করার মতো নয়। রান্নায় যেমন রয়েছে এর গুরুত্ব, তেমনি ঔষধি উপাদান হিসেবেও এর জুরি মেলা ভার।
ঠান্ডা লেগে গলা ব্যথা বা কাশি হোক, কিংবা বমি ভাব, এক টুকরো আদাই হলো ঘরোয়া সহজলভ্য জিনিস যা খেলেই বেশ উপশম পাওয়া যায়। আবার রান্নায় আলাদা স্বাদ আনতে যে এর কোনো ব্যতিক্রম নেই তা তো সবাই জানি। আবার এই আদাই চায়ের সাথে মিশিয়ে খেলে তা এক আলাদা মাত্রা এনে দেয়।
আরও পড়ুন: এই গরমে টক দই খুবই উপকারী
গলা খুশখুশ করলে এককাপ আদা চা খেলেই মিটতে পারে সমস্যা। এমনিতে আদার নানা রকমের গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা মোটামুটি সকলেই জানি।
আদার গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নিই
গ্যাসের সমস্যা দূর করে: যখনই গ্যাসের সমস্যা হবে তখনই আদা দিয়ে এক কাপ চা খেয়ে নিন। আদা কুচি করে কেটে হালকা লবণ এর সাথে চিবিয়ে খাবেন। গ্যাস এর সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
আদা ব্যাথা দূর করে: বিজ্ঞানীদের ধারণা মতে, মাইগ্রেন এর প্রথম ধাপ থেকেই আদা খাওয়া শুরু করলে এর জীবাণুগুলো সংক্রমণ করা থেকে বিরত থাকে। এছাড়াও যারা সবসময় আদা খাবার অভ্যাস করে তাদের তুলনামূলক কম ব্যাথা থাকে শরীরে।
ক্যান্সার রোধে সহায়তা করে: বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গেছে, আদা ক্যান্সার সংক্রমণের রোগ-জীবাণু ধ্বংস করে। মানুষের কোলন ক্যান্সার এর জীবাণু-সমূহ আদা নষ্ট করে দেয়। তাই, আদা অনেক সাহায্যকারী আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য।
বমি বমি ভাব দূর করে: বমি বমি ভাব হলেই আদা খাবেন। আদা হোক আর আদার চকলেট, সিরাপ, আদার রসই হোক না কেন যেকোনো একটি খেলেই বমি ভাব দূর হয়ে যাবে।
রক্তচাপ কমে: একটি নতুন গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, আদা রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে ফেলে। যাদের ডায়াবেটিস এর সমস্যা আছে তারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে আদা খাওয়া শুরু করতে পারেন। এতে আপনার ইনসুলিন এর ব্যবহার কমে যাবে।
রক্তজমাট রোধ করে: অস্ট্রেলিয়ান এক গবেষণায় দেখা গেছে, আদা শরীরের রক্তজমাট দূর করতে সাহায্য করে। রক্তের জীবাণু দূর করতে এর জুরি নেই।
তবে এই আদার মধ্যেও এমন অনেক কিছু আছে যা শরীরে বিপরীত প্রতিক্রিয়াও দেখায়। বিশেষ করে রান্নায় অতিরিক্ত আদা ব্যবহার বা শুকোনো আদা খাওয়ার নেশা শরীরে ক্ষতি ডেকে আনে।
আদার খারাপ গুণ হিসেবে বলা যায় গর্ভবতীদের জন্য ভালো নয় আদা ও গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে গবেষণাকালে মিশ্র ফলাফল পাওয়া গেছে। গর্ভাবস্থায় আদা না খাওয়াই ভাল। আদায় বেশ কয়েক ধরনের স্টিম্যুলেট রয়েছে যা শরীরের পেশী মজবুত করে। ফলে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের আদা এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস।
আদার জন্য শরীরে গরম বৃদ্ধি পায়। কাশি কমাতে আমরা আদা খেয়ে থাকি তবে, এর ফলে আমাদের দাঁতে আদা ক্ষতি করে। মুখ ও দাঁতে প্রদাহ বৃদ্ধি পায় আদার ফলে।
শরীরে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে আদা। ফলে, যাদের ওজন বেশি ও ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের জন্য আদা উপকারি। কিন্তু, যাদের হিমোফিলিয়া রয়েছে, তাদের জন্য আদা প্রায় বিষের সমান। তাই আদা কতটা খাবেন, সেটা বুঝে খেতে হবে। আদা খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই কারো যদি শরীরের ওজন কম হয়, সেক্ষেত্রে আদা খুবই কম খাওয়া উচিত। কারণ, আদায় ফাইবার থাকে প্রচুর পরিমাণে, যা শরীরের পিএইচ লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে হজমের প্রক্রিয়া খুবই ভাল হয়। কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় পিএইচ লেভেল বাড়লে ওজন আরো কমতে থাকে। ওজন বাড়াতে চাইলে আদা না খাওয়াই ভাল।