ক্রীড়া প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: ওয়ানডে, টেস্ট ও টি-২০ ম্যাচ জিতে আগেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চক্রপূরণ করেছে বাংলাদেশ। টানা দুই ম্যাচ জিতে এখন প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে টাইগাররা।
পাঁচ ম্যাচ টি-২০ সিরিজের প্রথম দুটিতে সহজেই সফরকারী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে যথাক্রমে ২৩ রান ও ৫ উইকেটে। মিরপুরে আজ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ। জিতলেই পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে কোনো ফরম্যাটে সিরিজ জয়ের বিরল কীর্তি গড়বে বাংলাদেশ। টানা দুই ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, মেহেদী হাসান, আফিফ হোসেনরা যেভাবে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করছেন, তাতে টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ আজ জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারেন। প্রথম অধিনায়ক হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জিতে ইতিহাসের সোনালি পাতায় চিরস্থায়ী হওয়ার সুযোগও হাতছাড়া করতে চাইবেন না।
মিরপুরের উইকেটে বল আসে দেরিতে। ব্যাটিং করা কষ্টকর। এমন উইকেটে প্রথম দুই ম্যাচে তিন টাইগার স্পিনার সাকিব, নাসুম ও মেহেদী ছিলেন বিধ্বংসী। দুই বাঁ হাতি পেসার মুস্তাফিজ ও শরীফুল ছিলেন ভয়ঙ্কর। বিশেষ করে মুস্তাফিজ ল-ভ- করে দিয়েছেন অসি ব্যাটিং লাইনআপ। টি-২০ ক্রিকেটে ‘কাটার মাস্টার’ দুর্বিষহ। তার উপর মিরপুরের পরিচিত উইকেটে গতি, সুইংয়ের পাশাপাশি কাটারের পর কাটার মেরে নাভিশ্বাস তুলেছেন সফরকারী ব্যাটসম্যানদের। দুই ম্যাচে মিতব্যয়ী বোলিং করে উইকেট নিয়েছেন ৫টি। ৪ ওভারে রান দিয়েছেন ৩৯। টাইগার স্পিনারদের চেয়ে মুস্তাফিজকে নিয়ে চিন্তিত সফরকারীরা। দলের বাঁ হাতি স্পিন অলরাউন্ডার অ্যাস্টন অ্যাগারের কণ্ঠে প্রশংসা ঝরেছে মুস্তাফিজ বিষয়ে, ‘মুস্তাফিজ সত্যিই দারুণ একজন বোলার। তার স্লোয়ারগুলো দুর্দান্ত। বল থেমে আসে। তার ওপর ঘূর্ণিও অনেক।’
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের ফয়সালা হয়ে যেতে পারে প্রথম তিন ম্যাচেই! দুই ম্যাচ হেরে অস্ট্রেলিয়া এখন সিরিজ হারার দুয়ারে। জয়ের পথ খুঁজে তারা দিশাহারা। অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডের আশা, সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে অন্তত ঠিকঠাক কিছু করতে পারবেন তারা।
অস্ট্রেলিয়া ধুঁকছে মূলত ব্যাটিংয়ে। তাদের বোলিং আক্রমণ দুই ম্যাচেই পারফর্ম করেছে ভালো। কিন্তু মিরপুরের উইকেটে খাবি খাচ্ছে ব্যাটসম্যানরা। কেবল মিচেল মার্শ ছাড়া অন্যরা দাঁড়াতেই পারছেন না। বাংলাদেশের স্পিন আর পেসের যৌথ আক্রমণের কোনো জবাব যেন নেই তাদের কাছে।
সেই ব্যর্থতা মেনে নিয়ে ওয়েড তাকিয়ে পরের ম্যাচে ভালো কিছু করার আশায়।
“দুই দলের বোলাররাই দারুণ বোলিং করছে। আমাদের বোলিং আক্রমণের পারফরম্যান্সেও আমরা খুশি। বোলিং কোনো সমস্যাই নয়। স্রেফ ব্যাটিংয়ে আঁটসাঁট হতে হবে আমাদের। এক ম্যাচে আমাদের টপ অর্ডার ব্যর্থ হয়েছে, আরেক ম্যাচে নিচের দিকের ব্যাটসম্যানরা। আশা করি, পরের ম্যাচে আমরা ঠিকঠাক করতে পারব।”
স্পিনিং অলরাউন্ডার অ্যাশটন অ্যাগার সমাধান দেখছেন উইকেট ধরে রাখায়। দ্বিতীয় ম্যাচে যা অনেকটা পেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। ১৪ ওভারে শেষে ২ উইকেটে তাদের রান ছিল ৮৭। পরে শেষ দিকে তারা পারেনি ঝড় তুলতে বা প্রত্যাশিত রান করতে। অ্যাগার তবু বললেন, এই উইকেটে এভাবেই গড়তে হবে ইনিংস।
“খেলাটাকে যতটা সম্ভব গভীরে নিয়ে যেতে হবে। উইকেট হাতে রেখে ইনিংসের শেষ দিকে যেতে হবে। এটাই আমার মনে হচ্ছে সবচেয়ে সেরা পথ আপাতত। ঝুঁকি নেওয়ার জন্য এই উইকেট খুবই কঠিন। তবে পাওয়ার প্লেতে আমরা মোটামুটি মানের শুরু পেলে, সেটাও কাজে দেবে। কালকে শুরুটা খারাপ হয়নি, তবে পরে সেটা ধরে রাখতে পারিনি। তবে এভাবেই খেলতে হবে।”
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টি আজ শুক্রবার, খেলা শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়।