ভারতীয় ক্রিকেটে শ্রেয়াস আইয়ার নতুন কেউ নন। এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও তাঁকে দেখল। গত নভেম্বরে টেস্ট অভিষেকে শতক পেয়েছেন, ওয়ানডেতেও আছে শতক। তবে আইয়ারের প্রকৃত রূপ দেখা গেল গত এক সপ্তাহে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে টানা তিন ম্যাচে অপরাজিত অর্ধশতক করেছেন আইয়ার। যা দেখে নির্ঘাত নিজেদের বাহবা দিচ্ছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) কর্মকর্তারা। নিলামে বাকি সবার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই ব্যাটসম্যানকে ১২ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে নিয়েছে কলকাতা।
আইপিএলের নিলাম টিভিতে বসে দেখেছেন আইয়ার। আর নিলামের সময় তাঁকে নিয়ে দলগুলোর এমন আগ্রহ দেখে নিজেও উত্তেজনা বোধ করছিলেন। উত্তেজনায় নাকি বুক ধড়ফড় করছিল আইয়ারের।
আইপিএলে আইয়ারের প্রতি আগ্রহ থাকারই কথা। ইনিংস গড়তে জানেন, আবার দলের প্রয়োজনে হাত খুলে মারতে জানেন। এমন এক ব্যাটসম্যানকে দলে পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। তারুণ্যের শক্তিতে বিশ্বাসী দিল্লি তরুণ আইয়ারকে অধিনায়ক বানিয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছিল। টানা দুই বছর দলটিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন আইয়ার। গত মৌসুমে চোট বাধ সাধে। জাতীয় দলের ম্যাচ খেলতে গিয়ে চোট পান আইয়ার। সে সুবাদে অধিনায়কত্ব পান তাঁর চেয়েও নবীন ঋষভ পন্ত। পন্তের অধিনায়কত্বে দল এত ভালো করেছে যে তাঁকেই মূল অধিনায়ক হিসেবে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি। এবারের নিলামের আগে ছেড়ে দেয় আইয়ারকে।
এতে অন্য দলগুলোরই সুবিধা হয়েছে। কারণ, এবার বেশ কয়েকটি দল অধিনায়কের খোঁজে নেমেছে। এউইন মরগানকে ছেড়ে দেওয়া কলকাতাও মরিয়া হয়ে নেমেছিল তাঁর জন্য। নিলামে এমন টানাটানি নিজ চোখে দেখছিলেন আইয়ার। কেকেআর ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমি নিলাম দেখছিলাম। শুরু থেকেই কেকেআর আমাকে পাওয়ার চেষ্টা করেছে। অন্য বড় কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজিও নেমেছিল। আমার মনে আছে, অনেকক্ষণ চলেছে। আমরা ভারতীয় দলের খেলোয়াড়েরা সবাই একসঙ্গে বসে টিভিতে নিলাম দেখছিলাম। আমার বুক ধড়ফড় করছিল এবং নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলাম না।’
হাজার হলেও নিলামে নিজেকে বিক্রি হতে দেখছিলেন দেখে নিজেকে সামলে রাখার চেষ্টা করেও পারছিলেন না আইয়ার, ‘আমি শান্ত হওয়ার ভান করতে চাইছিলাম কিন্তু ভেতরে ভেতরে ঠিকই চিন্তায় ছিলাম। শেষ পর্যন্ত কেকেআর পেয়েছে আমায়। এই অনুভূতিটা দারুণ। বিশেষ করে, কেকেআরের সমৃদ্ধ ইতিহাস বিবেচনা করে আমি খুবই গর্বিত।’
কেকেআরে শুধু আরেকজন ক্রিকেটার নন আইয়ার, অধিনায়কের দায়িত্বটাও তাঁর। ২৭ বছর বয়সী আইয়ার দলের মধ্যে জয়ের মানসিকতা সৃষ্টি করতে চান, ‘আমার জন্য কেকেআর পরিবারের অংশ হওয়াটা অনেক বড় ঘটনা। অতীতে দুর্দান্ত সব ক্রিকেটাররা যা করে গেছেন, তার প্রশংসা করতেই হবে। তাঁরা যা করেছেন, আমিও সে পথে এগোতে চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমি খেলোয়াড়দের অধিনায়ক এবং এমন এক আবহ সৃষ্টি করতে চাই, যেখানে সবাই একটা জিনিস নিয়েই ভাববে আর তা হলো, জয় পাওয়া।’