ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: জনপ্রিয় গেম ফ্রি ফায়ার বন্ধের পর এর আইনি লড়াই করতে গেমটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরের গারেনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেডের পক্ষভূক্ত হওয়ার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন বাংলাদেশের হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দিয়েছেন।
১০ অক্টোবর শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২৬ অক্টোবর নির্ধারণ করেছিল হাইকোর্ট।
আদালতে বিদেশী প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী ও তানভীর কাদের। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির পল্লব ও মোহাম্মদ কাওছার।
এ বিষয়ে হুমায়ন কবির পল্লব জানিয়েছেন, আদালত তাদের আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে। ফলে তারা আর এ দেশে আইনি লড়াই করতে পারবে না।
পূর্বে একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর, গত ১৬ আগস্ট দেশের বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে থাকা পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকারক সব গেম অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এরপর ২৫ আগষ্ট এসব গেম বন্ধের খবর আসে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আইনি লড়াই করতে উচ্চ আদালতে পক্ষভূক্ত হওয়ার আবেদন করেছে গেমটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরের গারেনা অনলাইন প্রাইভেট লিমিটেড।
১০ অক্টোবর হুমায়ন কবির জানিয়েছিলেন, তারা একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠান। তাদের এ দেশে কোনো অফিস নেই। তারা হাইকোর্টে আবেদন করার কোনো এখতিয়ার (লোকাস স্ট্যান্ডিং) রাখেন না। তারা বলছে ফ্রি ফায়ার বন্ধের কারণে এ দেশের বড় একটি ব্যবহারারীর অংশ গেমটি ব্যবহার করতে পারছেন না। তা তো কোনো যুক্তি হতে পারে না।
এর আগে ২৪ জুন মানবাধিকার সংগঠন ল’অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষ হতে এ রিট করা হয়েছিল।
এ রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টরা।
আইনজীবী হুমায়ন কবির বলেন, পাবজি এবং ফ্রি ফায়ারের মত গেমগুলোতে দেশের যুব সমাজ এবং শিশু-কিশোররা ব্যাপকভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে। যার ফলে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি বিনষ্ট হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হয়ে পড়ছে মেধাহীন। এসব গেম যুব সমাজকে সহিংসতা প্রশিক্ষণ দেওয়ার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে টিকটক, লাইকি অ্যাপগুলো ব্যবহার করে দেশের শিশু-কিশোর এবং যুব সমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। সারা দেশে কিশোর গ্যাং কালচার তৈরি হচ্ছে। টিকটক অনুসারীরা বিভিন্ন গোপনীয় জায়গায় পুল পার্টির নামে অনৈতিক বিনোদন ও যৌন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে।
এছাড়া সম্প্রতি নারী পাচারের ঘটনা এবং বাংলাদেশ থেকে দেশের বাইরে অর্থ পাচারও টিকটক, লাইকি এবং বিগো লাইভের মাধ্যমে চলছে, যেটা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক এবং দেশ ও জনস্বার্থ পরিপন্থী, শৃঙ্খলা পরিপন্থী, মূল্যবোধ পরিপন্থী।
আরো পড়ুন: