নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: বাংলাদেশ টেলিভিশনে চলচ্চিত্রবিষয়ক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ছায়াবাণী করে সাড়া ফেলেছিলেন খুলনার দাকোপ এলাকার নারী হাসনা হেনা। তারপর দীর্ঘ ১৪ বছর স্বামী-সন্তানসহ কাটিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়। কিন্তু এক সময় মাটির টানে ফিরে আসেন গ্রামে। গত দুই বছর ধরে দাকোপের পানখালীতে অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে তুলেছেন সমন্বিত কৃষি খামার। ‘হাসনা হেনা এগ্রো ফার্ম’ নামের এই খামারে একই সঙ্গে চলছে হাঁস-মুরগি ও ভেড়া পালন। পুকুরের পাশে বাঁশের উঁচু পাটাতনে সনাতন পদ্ধতিতে ডিম থেকে মুরগি উৎপাদন এবং বড় করে বাজারে বিক্রি করা হয়। পাশের সবজি খেতে লাগানো হয়েছে আগাম শীতকালীন শাকসবজি। সেই সঙ্গে খামারের ৬ বিঘা জমিতে চলছে চিংড়ি ও কার্প জাতীয় মাছের চাষ। রয়েছে ধান চাষের ব্যবস্থাও।
মাত্র দুই বছরে খামারে তার সাফল্য দেখে গ্রামের অনেক নারীই বাড়ির আঙিনা বা জমিতে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন সমন্বিত কৃষি খামার।
হাসনা হেনা বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে শিপ ফার্মিং ও ফিশ ফার্ম দেখেছি। তারা বিশেষ পদ্ধতিতে ভেটকি বা কার্প জাতীয় মাছ ঘরের ভিতরে চাষ করে। সেই থেকে আগ্রহটা তৈরি হয়েছে। শুরুতে গ্রাম থেকে মুরগির বাচ্চা ও সরকারি হাঁস খামার থেকে এক দিনের বাচ্চা সংগ্রহ করে লালন-পালন করা হয় খামারে। চিংড়ি চাষের জন্য গভীর করে কাটা পুকুর-নালার মাটি দুই পাশের পাড়ে উঁচু করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে চলছে কুমড়া, লাউ, টমেটো, ঢেঁড়স, শিমসহ শীতকালীন শাকসবজির চাষ। বর্তমানে খামারেই ডিম থেকে মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করা হয়। এ ছাড়া আবদ্ধ হালকা মিঠাপানিতে পরীক্ষামূলক বাগদা চিংড়ি চাষ করা হচ্ছে খামারে। সেই সঙ্গে চলছে মিশ্র সাদা কার্প মাছের চাষ। প্রথম বছরেই উৎপাদিত ফসল-মাছ বিক্রি করে পরিচালনার ব্যয় ও কর্মচারীদের বেতন তুলতে পেরেছেন হাসনা হেনা।
এদিকে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি নারীদের কর্মসংস্থান তৈরিতে উৎসাহিত করছেন এই নারী উদ্যোক্তা জানালেন বাংলাদেশ উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের খুলনা বিভাগীয় প্রধান শামীমা সুলতানা শিলু। তিনি বলেন, নিভৃত পল্লীর এই নারী উদ্যোক্তাকে দেখে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এভাবে সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তুলতে পারলে মজবুত হবে গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত।