ক্রীড়া প্রতিবেদক , ধূমকেতু ডটকম: টোকিওর অ্যারিয়াক স্পোর্টস পার্কে আবেগঘন এক দৃশ্য। মেয়েদের স্কেটবোর্ডিংয়ে মাত্র ১৩ বছর বয়সে ব্রোঞ্জ পদক জেতা ব্রিটেনের স্কাই ব্রাউনকে ঘিরে উন্মাদনা। এই ইভেন্টে স্বর্ণজয়ী জাপানের সাকুরা ইউসুজামি নয়, আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে স্কাই ব্রাউন। তৃতীয় হয়ে ৯৩ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভাঙলেন, জায়গা করে নিলেন ইতিহাসের পাতায়।
১৩ বছর ২৮ দিন বয়সী ব্রাউন অলিম্পিকে সবচেয়ে কম বয়সী ব্রিটিশ অ্যাথলেট হিসেবে পদক জয়ের অনন্য কীর্তি গড়েছেন। অথচ বুধবার পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে ব্রাউন যে গলায় পদক পরবেন, তা কল্পনাও করেননি কেউ।
গত বছরের ২৮ মে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ভয়াবহ ইনজুরিতে পড়া ব্রাউনের বেঁচে ফেরার আশা ছেড়ে দিয়েছিল সবাই। ট্রেনিংয়ে জাম্প দিতে গিয়ে মাথার খুলি ভেঙে যায়, বাঁ হাতের বাহু ও কবজি ভেঙে যায়, হার্ট এবং ফুসফুসেও ক্ষতি হয়। হাসপাতালে ভর্তি করার পর বেশ কিছুদিন কোনো সাড়া ছিল না ব্রাউনের। প্রথম দিকে ডাক্তাররা তার বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। বেশ কিছুদিন পর জ্ঞান ফেরে তার। সেই সময় ব্রাউনের বাবা বলেছিলেন, ‘ভাগ্যের জোরে বেঁচে গিয়েছে সে।’
নতুন জীবন পাওয়া ব্রাউন এখন ব্রিটেনের নতুন রানী। হয়তো স্বর্ণপদক জিততে পারেননি, তবে ১৩ বছর বয়সে ব্রোঞ্জ জিতে যে কীর্তি গড়েছেন, ১৯২৮ সালের পর যা এই প্রথম। সেই সময় অনুষ্ঠিত আমস্টারডাম অলিম্পিকে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে গ্রেট ব্রিটেন দলে অংশ নিয়েছিলেন মার্গে হিন্টন। ব্রাউনের চেয়ে বয়সে ১৫ দিন বড় ছিলেন হিন্টন।
ব্রাউনের জীবনের গল্পটাও সিনেমার মতো। তার মা মিয়েকো জাপানি এবং বাবা স্টুয়ার্ট ব্রিটিশ। ২০০৮ সালের ৭ জুলাই জাপানের মিয়াজাকিতে জন্ম ব্রাউনের। জাপানে জন্ম নিলেও বাবার কারণে বয়সের অর্ধেক সময়ই পার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তার পরিবারও স্কেটবোর্ডিং খেলেছেন। স্কেটবোর্ডিংয়ের সঙ্গে সার্ফিং খেলতে পছন্দ করতেন ব্রাউন। খেলার বাইরে নাচেও বেশ পারদর্শী ব্রাউন। ২০১৮ সালে আমেরিকান টিভিপ্রোগ্রাম ‘ড্যান্সিং দ্য স্টার্স জুনিয়রে’ প্রথম হয়েছিলেন। ১২ বছর বয়সী টোকিও অলিম্পিকের জন্য গ্রেট ব্রিটেনের দলে তার নাম যুক্ত হয়। অথচ প্রথমে জাপানের হয়ে স্কেটবোর্ডিং খেলার আগ্রহের কথা বলেছিলেন ব্রাউন। এখন ব্রিটেনের হয়ে খেলতে নেমেই তো চমক দেখিয়েছেন তিনি।