অবশেষে কন্টেইনার ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে
সীতাকুণ্ডে অবশেষে কন্টেইনার ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ৩ দিন পর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী ১৮ বীর ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (৭ জুন) ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এছাড়া বিএম ডিপোকে ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করেছেন তিনি।
আরিফুল ইসলাম বলেন, আসলে এখানে কী পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ এখানে যারা কর্মরত ছিলেন তাদের অনেকেই নিহত এবং আহত হয়েছেন। অনেক নথি পুড়ে গেছে।
তিনি বলেন, আরেকটি তথ্য দিতে চাই, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ টিম এখানে এসেছে। এখানে বিপজ্জনক আর কিছু আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখছেন। তাদের কাছ থেকে আমরা একটা ফাইনাল রিপোর্ট পাবো। সেখানে আমরা দেখবো আর কোনো বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না। এটুকু আমরা বলতে পারি প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে।
আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। আপনারা জানেন কিছু কন্টেইনারে কাপড়ের পণ্য আছে। ওইগুলো পানি দেয়ার ফলে ধোঁয়া বের হচ্ছে। তবে ভয়ের কিছু নাই বলে আমি মনে করি। এছাড়া আর যাতে হতাহত না ঘটে তার জন্য আমরা গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছি। এ কারণে যেগুলো থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে, সেগুলোর আশেপাশে আমরা কম যাচ্ছি। আমরা আর কোনো হতাহত চাই না। আমাদের টার্গেট হচ্ছে যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে, কিন্তু আর যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে কোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে ছিল এবং থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
গত শনিবার (৪ জুন) রাত ৮টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুনের সূত্রপাত হয়। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১১টায় এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
রাসায়নিক থাকায় একটি কনটেইনারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্থানীয় শ্রমিকসহ অনেকে হতাহত হন। পুড়ে যায় ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়িও।
এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা এক এক করে বেড়েই চলেছে। সবশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত নয় জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন চার শতাধিক। নিহত ৪৯ জনের মধ্যে ২২ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লাশ হস্তান্তর করা ২২ জন হলেন—হাবিবুর রহমান (২৩), রবিউল ইসলাম (১৯), মমিনুল হক (২৪), মহি উদ্দিন (২২), তোফায়েল ইসলাম (২২), আফজাল হোসেন, মো. সুমন (২৮), ইব্রাহিম হোসেন (২৭), ফারুক জমাদ্দার (৫০), মো. হারুন (৫৫), মো. নয়ন (২২), শাহাদাত হোসেন (২৯), শাহাদাত উল্লাহ মজুমদার, মো, রিদুয়ান (২৫), রানা মিয়া, তহিদুল হাসান, নাজিমউদ্দিন রুবেল, নিপন চাকমা, মিঠু দেওয়ান, আলা উদ্দিন (৩৫), শাকিল তরফদার ও মো. মনিরুজ্জামান (২২)।
এদিকে পরিচয় শনাক্ত হয়নি, নিহত এমন ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করতে শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।