নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর থেকেই ভিসা ও পাসপোর্ট সেবা দিতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। কিন্তু সবক্ষেত্রে অনলাইন সেবা না চালু না থাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীসহ সেবা গ্রহণকারীরা নানামুখী জটিলতায় পড়ছিলেন। অবশেষে এসব ভিসা জটিলতা নিরসনে অনলাইন সেবা চালু করার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সুরক্ষা সেবা বিভাগ। এ জন্য এ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়ে আগামী ২২ আগস্টের মধ্যে এ সেবা চালুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সঙ্গে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা ছাড়পত্র অনলাইনে দেওয়া শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দ্বৈত নাগরিকত্ব, অন-অ্যারাইভাল ভিসা প্রদান, বিদেশে পাসপোর্ট পাঠানো, ভারতে চিকিৎসার জন্য যাওয়াসহ কোন কোন বিষয়ের আবেদন অনলাইনে নেওয়া সম্ভব সেটা যাচাই করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. যাহিদ হোসেন, উপ-সচিব মুহাম্মদ আবদুল হাই মিলটন, উপ-সচিব তরফদার মাহমুদুর রহমান এবং আইসিটি সেলের প্রোগ্রামার আইয়ুব হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী ২২ আগস্টের মধ্যে এ অনলাইন সেবা চালু করার উদ্যোগ নিতে তাদের বলা হয়েছে।
অন অ্যারাইভাল ভিসা জটিলতা নিয়ে গত ৮ জুলাই বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। চিঠিতে করোনা পরিস্থিতির কারণে সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে গত ১৬ জুন এক চিঠিতে শুধুমাত্র বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী ছাড়া সকল দেশের নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশে আগমনী (অন-অ্যারাইভাল) ভিসা প্রদান স্থগিত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তাই, আগমনী ভিসা প্রদান স্থগিত রাখার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও এয়ারলাইন্সকে জরুরি ভিত্তিতে অবহিত করার অনুরোধ জানানো হয়।
অন্যদিকে, করোনা পরিস্থিতিতে নৌ বন্দরগুলো থেকে বাংলাদেশের এন্ট্রি ভিসা নিতে সমুদ্রগামী জাহাজের বিদেশি ক্যাপ্টেন, নাবিক ও ক্রুদের বেশ কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে হয়। এ বিষয়েও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে সমুদ্রগামী জাহাজের নাবিকদের ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, সমুদ্রগামী জাহাজের পাইলট ও নাবিক ও ক্রুরা ‘নেক্সট এভেইলেবল ফ্লাইট’ না পাওয়া পর্যন্ত জাহাজ থেকে সাইন অফ করে এন্ট্রি ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের নিয়ম অনুযায়ী ক্রুরা কোনও দেশে বিশেষ কারণে আটকা পড়লে তাদের হোটেল অথবা অন্য কোনও স্বাস্থ্যসম্মত জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করা সেই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন অনুবিভাগ) আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী বলেন, আজ হোক আর কাল হোক, সব সেবাই অনলাইনে চালু করতে হবে। সেজন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সঙ্গে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের যে নিরাপত্তা ছাড়পত্র দিতে হয় সেটা অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে। এই কার্যক্রম পুরোপুরিই অনলাইনে চলছে। আর অন্যগুলোর সেবা অনলাইনে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তবে কবে নাগাদ এ কার্যক্রম শেষ করা যাবে সেটা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।