স্বাস্থ্য

অতিসংক্রামক হলেও সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের বৈশিষ্ট্য আছে ওমিক্রনে

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: আফ্রিকায় শনাক্ত করোনার ওমিক্রন ধরনটি অতিসংক্রামক হলেও এ ভাইরাসের আছে সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের বৈশিষ্ট্য। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ঠান্ডা-জ্বরের জন্য দায়ী একটি ভাইরাসের জেনেটিক উপাদানের অংশকে সঙ্গে নিয়ে অন্তত একবার নিজের জিনগত রূপান্তরের মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে এটি। খবর রয়টার্স ও এএফপির।

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক অলাভজনক ও উন্মুক্ত তথ্যভান্ডার হিসেবে গড়ে ওঠা সফটওয়্যার সংগঠন ‘ওপেন সায়েন্স ফ্রেমওয়ার্ক’-এর প্রিপ্রিন্ট ওয়েবসাইটে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবদেহের কোনো আক্রান্ত কোষে দুটি ভাইরাসের সংমিশ্রণের ফলে জিনগত রূপান্তরের মাধ্যমে ওমিক্রন সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করছেন গবেষকরা।

গবেষকরা বলছেন, করোনার আগের ধরনগুলোতে ওমিক্রনের জেনেটিক বিন্যাস দেখা যায়নি। তবে নতুন ধরনটির বৈশিষ্ট্য অন্য অনেক ভাইরাসেই দেখা যায়, যেগুলোর কারণে সাধারণ ঠান্ডা-জ্বর হয়ে থাকে।

ওমিক্রন নিয়ে এ গবেষণার নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসভিত্তিক ডাটা অ্যানালিটিপ ফার্মের ভেঙ্কি সৌনদরারাজন। এ গবেষক বলেছেন, সুনির্দিষ্ট এই জেনেটিক উপাদান নিজের মধ্যে ঢুকিয়ে ওমিক্রন সম্ভবত নিজেকে আরও বেশি সংক্রমণ ক্ষমতার অধিকার হয়েছে, যা তাকে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ফাঁকি দিতেও সাহায্য করছে।

ভেঙ্কি সৌনদরারাজন বলেছেন, জিন বিন্যাসে সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য থাকার ফলেই হয়তো ওমিক্রন মৃদু উপসর্গ বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপসর্গ ছাড়াই সহজে ছড়াতে পারছে।

ওমিক্রন শনাক্তের পর প্রাথমিকভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এ ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি। বহুবার জিনগত রূপ বদলের মাধ্যমে এর বিস্তার ঘটেছে। একে ডেলটার চেয়েও দ্বিগুণ সংক্রামক বলা হয়েছে। অবশ্য এসব বিষয়ে নিশ্চিত হতে এক-দুই সপ্তাহ সময় লাগবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

ওমিক্রন নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। তারা একবার বলছে, এটি খুবই সংক্রামক। আরেকবার বলছে, বিপর্যয় ঘটাতে পারে; সব দেশকে প্রস্তুত থাকতে হবে। আবার গতকাল সংস্থাটি বলেছে, ওমিক্রন নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে; আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই।

আগের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ফুসফুস ও গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমের কোষ একই সঙ্গে সার্স-সিওভি-২ এবং সাধারণ ঠান্ডার করোনাভাইরাসকে আশ্রয় দিতে পারে। এ ধরনের কোনো ক্ষেত্রে একই হোস্ট কোষে দুটি ভাইরাসের সংমিশ্রণ ঘটতে পারে এবং নতুনটির একাধিক অনুলিপি তৈরি করতে পারে, যেগুলোর জিন বিন্যাসে আগের দুই ভাইরাসের জেনেটিক উপাদান থাকে।

সৌনদরারাজন এবং তার সহকর্মীরা বলেছেন, সম্ভবত দুই ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির দেহে সার্স-সিওভি-২-এর কোনো সংস্করণ অন্য ভাইরাসের জেনেটিক বৈশিষ্ট্য নিজের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়েছে। সৌনদরারাজনদের এ গবেষণা এখনও অন্য গবেষকদের মাধ্যমে যাচাই বা পিয়ার রিভিউ হয়নি।

সৌনদরারাজন বলেছেন, ওমিক্রনের মতো একই জেনেটিক বিন্যাস ঠান্ডার জন্য দায়ী এইচসিওভি-২২৯ই নামে পরিচিত করোনাভাইরাস এবং এইডসের জন্য দায়ী হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাসে (এইচআইভি) অনেকবারই দেখা যায়।

আরো পড়ুন:

ওমিক্রন ঠেকাতে সব দেশকে প্রস্তুত থাকতে বললো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *