শিক্ষা ও সাহিত্য

অটো পাস নয়, এবার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে ভিন্ন চিন্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি দিনে দিনে অবনতি হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি। এতে আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা নেওয়ার সম্ভাবনা ফিকে হয়ে আসছে। এ অবস্থায় ‘অটো পাস’ না দিয়ে অন্য কোনো উপায়ে মূল্যায়নের পরিকল্পনা করছে সরকার। ‘জাতীয় মূল্যায়ন পরামর্শক কমিটি’ গঠন করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

অ্যাসাইনমেন্ট ও সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের ভিত্তিতে মূল্যায়নের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। প্রাথমিকভাবে কিছু বিকল্প পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা চলছে। একেবারে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের ভিত্তিতে কোনো উপায়ে মূল্যায়ন করা যায় কি না, সেই ভাবনা যেমন আছে; তেমনি এইচএসসির ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসি এবং সমমানের ফলকে গণনায় নেওয়ার পাশাপাশি অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা এবং এসএসসির ক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্টের পাশাপাশি জেএসসি পরীক্ষার ফলকে গণনায় নেওয়ার মতো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। মোদ্দা কথা, এবার একেবারে ‘অটো পাস’ দিতে চায় না শিক্ষা বোর্ডগুলো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, এসএসসি ও এইচএসসির মূল্যায়ন কোনোভাবেই পরীক্ষা ছাড়া হওয়া উচিত নয়। এ জন্য প্রয়োজনে আরও অপেক্ষা করা উচিত।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন শনিবার বলেন, ‘এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। কী হবে, সেটি খুব দ্রুতই জানানো হবে।’

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়ার যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেই পরিস্থিতি এখন আর নেই। এ জন্য ‘জাতীয় মূল্যায়ন পরামর্শক কমিটি’ গঠন করে তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

আরেক কর্মকর্তা বলেন, প্রথমত পরীক্ষা নেওয়া হবে না সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। অর্থাৎ পরীক্ষার পরিকল্পনা এখনো বাদ হয়ে যায়নি। তবে ‘পথঘাট’ বের করার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে জানতে চাওয়া হবে। কিন্তু তারা (বোর্ড) ‘অটো পাস’ দিতে চাচ্ছে না। কারণ, এটি শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করে।

প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি এবং এপ্রিল মাসে এইচএসসি পরীক্ষা হতো। কিন্তু করোনার কারণে গত বছর থেকে পুরো শিক্ষাপঞ্জি এলোমেলো হয়ে গেছে। করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছুটি আছে।

শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তারা জানান, তাদের পরিকল্পনা ছিল, সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে ৬০ দিন ক্লাস করিয়ে আটকে থাকা এ বছরের এসএসসি এবং ৮৪ দিন শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার। কিন্তু এই পরিকল্পনাটির বাস্তবায়ন নির্ভর করছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ওপর। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা নেই। এমনকি আরও কয়েক মাসের মধ্যে খোলা যাবে কি না, সেটাই এখন আলোচনার বিষয়। কারণ, সরকারের পরিকল্পনা হলো, ‘পর্যাপ্তসংখ্যক’ টিকা দেওয়ার পর এবং করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *