অগ্নিকাণ্ডের পিছনে রাসায়নিক পদার্থই ছিল মূল গুপ্তঘাতক
অগ্নিকাণ্ডের পিছনে রাসায়নিক পদার্থই ছিল মূল গুপ্তঘাতক যার কারণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তাঁদের মধ্যে ৯জন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্য। বিস্ফোরণে দগ্ধ ও আহত হয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। তারা চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিলেন। ডিপোর কর্মীরা বিশেষ করে ক্রেনচালকরা ক্রেন দিয়ে কিছু কনটেইনার সরিয়ে নিচ্ছিলেন। অন্য কর্মীরা ফায়ারকর্মীদের নানাভাবে সহায়তা করছিলেন। এ সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণে ডিপো লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এতে শুরুতেই ক্ষতিগ্রস্ত হন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা; আর তাঁদের কাছাকাছি থেকে মোবাইলে ভিডিও ধারণকারী শ্রমিক বা উত্সুকরা। বিস্ফোরণের ধাক্কা ছড়িয়ে পড়ে পাঁচ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, কনটেইনার ডিপোতে যে রাসায়নিক দ্রব্য ছিল তা তাঁদের জানা ছিল না। ফলে তাঁরা স্বাভাবিক দূরত্ব থেকে আগুন নেভানোর কাজ করছিলেন। বিস্ফোরণের পর বোঝা গেল সে রাতে বেসরকারি ওই ডিপোতে গুপ্তঘাতক ছিল কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক। রাসায়নিকের জারগুলোর একের পর এক বিস্ফোরণ ডিপো ও আশপাশে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আগুন ও উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে আড়াই বর্গকিলোমিটার এলাকায়। ডিপোর ভেতরে যারাই এর সংস্পর্শে এসেছে তাদের শরীরের কোনো না কোনো অংশ ঝলসে গেছে। কয়েকজনের হাত-পা বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান। বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ডিপো কর্তৃপক্ষের তথ্য সরবরাহে লুকোচুরি ও অসহযোগিতার কারণেই ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা এত বেশি হয়েছে। ’
সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকার ওই ডিপোতে গত শনিবার রাতে আগুন লাগে। গতকাল রাত ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন সম্পূর্ণ নেভানো সম্ভব হয়নি। তবে নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণ ও হতাহতদের উদ্ধারে গতকাল সারা দিন ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা কাজ করেছেন। রাত থেকেই হতাহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নেওয়া হয়। চট্টগ্রামের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে অনেককে। সেখান থেকে গুরুতর অনেককে পাঠানো হয়েছে ঢাকায়।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী গতকাল রাতে গণমাধ্যমকে জানান, এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ সংখ্যা জানান তিনি। এর আগে সন্ধ্যায় সিভিল সার্জন জানিয়েছিলেন মৃতের সংখ্যা ৪৯। এদিকে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, আনুমানিক ২০০ জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। মরদেহগুলো চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
নিহত কয়েকজনের নাম জানা গেছে
নিহতদের মধ্যে মাত্র কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তাঁরা হলেন মো. মোমিনুল হক (২৪), মো. মহিউদ্দিন (২২), হাবিবুর রহমান (২৩), রবিউল আলম (১৯), মনিরুজ্জামান (৫০), তোফায়েল আহমেদ (২৮) ও আলাউদ্দিন (৩৫)। অধিকাংশকেই চেনা যাচ্ছে না।
স্বজনের খোঁজে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সমানে শত শত স্বজন ও সাধারণ মানুষ ভিড় করেছে। তাদের সামলাতে শেষ পর্যন্ত সেনা সদস্যদের মোতায়েন করতে হয়েছে।
এ ঘটনায় প্রশাসন, কাস্টম, বন্দর এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার নিহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে এবং আহতদের ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। আর হতাহতদের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে নগদ এক কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত
ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে কনটেইনার ডিপোতে আগুনের সূত্রপাত হয়। দ্রুত তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এর পরপরই সেখানে পৌঁছায় সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস। দুটি দল একযোগে কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় কারখানার ভেতরে ওই পালায় দায়িত্বরত দুই শতাধিক শ্রমিক-কর্মকর্তা এবং ভেতরে আসা লরির চালক ও সহকারীসহ অসংখ্য কৌতূহলী মানুষ ছিলেন। অনেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও করছিলেন। কয়েকজন ফেসবুক থেকে সরাসরি (লাইভ) প্রচার করছিলেন। এ অবস্থায় রাত আনুমানিক ১১টায় হঠাৎ একটি কনটেইনারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এই বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে বিকট শব্দে ঘটনাস্থলের চারপাশে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা প্রকম্পিত হয়। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পুরো এলাকার। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও উদ্ধারকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা সেখানে ছুটে যান। এরপর অসংখ্য অ্যাম্বুল্যান্স, পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন গাড়িতে হতাহতদের সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দগ্ধদের আর্তনাদ ও স্বজনহারাদের আহাজারিতে হাসপাতালে অন্য রকম পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ডিপোর বিভিন্ন কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় আগুন নেভানো কিংবা উদ্ধার তৎপরতা চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
হাসপাতালে দুই ভুক্তভোগীর বর্ণনা
চমেক হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ৬ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আহত ক্রেনচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে যখন আগুন লাগে, তখন আমি ক্রেনে করে ১৫-২০টি কনটেইনার সরিয়েছি। এরপর বিস্ফোরণ হলে গাড়ির সামনের আয়না ভেঙে আগুন চোখের দিকে আসতেই আমি দুই হাত সামনে রাখি। এতে আমার হাত দুটি আগুনে ঝলসে গিয়ে মুখেও লেগেছে। এরপর কী হয়েছে জানি না। ’
সালাউদ্দিনের দুই হাত ব্যান্ডেজে মোড়ানো। মাথায় ও কপালের অংশে আগুনে ঝলসে যাওয়া চিহ্ন দেখা যায়।
একই ওয়ার্ডের ৩ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন আহত রাকিব ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি ময়মনসিংহ। কাভার্ডভ্যানের হেলপার। বিস্ফোরণের সময় আমার বাম হাতে ও মুখে আঘাত পেয়েছি। পরিবারের লোকজন এখনও জানে না। বিস্ফোরণের পর সেখানে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ’
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, নিখোঁজদের সন্ধানে স্বজনরা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড খুঁজছেন। ওয়ার্ডে না পেয়ে অনেকেই জরুরি বিভাগের ভেতরের মর্গে গিয়েও খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কোথাও না পেয়ে কখনো মিডিয়ার সামনে আবার কখনো জরুরি বিভাগের বাইরে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
গতকাল সকাল ১১টা ১০ মিনিটের দিকে হাসপাতালে এসে ছোট ভাইয়ের খোঁজ করছিলেন তার বড় তিন ভাই আনোয়ার হোসেন, মোখতার ও আমজাদ। তাঁরা জানালেন, তাঁদের ভাই আফজাল হোসেনকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। আফজালের ছবি নিয়ে তাঁরা হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার ভাই রিদোয়ানকে খুঁজে পাচ্ছি না। ’
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ‘আমি প্রস্তুতি হিসেবে বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের নিয়ে রোগী আসার আগে বৈঠক করেছিলাম। কিন্তু দেখেছি অনেক চিকিৎসক সীতাকুণ্ডের ঘটনায় আহতরা আসার খবরে নিজেরা স্ব-উদ্যোগে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত হয়ে পড়েন। যা আমি গত ৩২-৩৫ বছরে দেখিনি। এ পর্যন্ত যত রোগী এসেছে আমরা চেষ্টা করেছি প্রত্যেককে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দিতে। কোনো সমস্যা হয়নি। পর্যাপ্ত লোকবল আছে। ’
সরেজমিন ঘটনাস্থল
রবিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডিপোর সামনের গেটে প্রচুর মানুষ। সেখানে একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি হাতে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন আয়েশা বেগম নামের এক নারী। জানালেন, তাঁর ছেলে ১৫ বছর বয়সী শিশু মুহম্মদ শহিদুল ইসলাম ডিপোতে অফিস সহকারী পদে কর্মরত ছিল। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
আরেকটু সামনে যেতেই দেখা গেল, গাউসিয়া কমিটির একদল সদস্য ব্যাগভর্তি মরদেহ নিয়ে ডিপোর ভেতর থেকে ধোঁয়া ভেদ করে বেরিয়ে আসছেন। তাঁদের একজন আলী আকবর জানালেন, ‘ভেতরে মরদেহ পোড়া অবস্থায় আছে। আগুন ও ধোঁয়ার কারণে কাছে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ’
এই প্রতিবেদক ঘটনাস্থলে থাকতেই পুড়তে থাকা ডিপোর ভেতরে বেশ কয়েকবার বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এর মধ্যেই উদ্ধারকাজ করছিলেন বিভিন্ন সংস্থার লোকজন ও স্বেচ্ছাসেবকরা।
২৪ একর জায়গাজুড়ে বিএম ডিপোর অবস্থান। ভেতরে সারি সারি কনটেইনার। সামনের দিকে কিছু কনটেইনার ভেদ করে আগুনের লেলিহান শিখা বেরিয়ে আসছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিলেন তখন।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক পূর্ণেন্দু দস্তিদার কালের কণ্ঠকে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর, মিরসরাই, ফেনী ও নোয়াখালী থেকে ২৫টি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৮৩ জন কর্মী এতে অংশ নেন।
বিস্ফোরণের পর ডিপো এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কনটেইনারের ছোট ছোট অংশ চোখে পড়ে। ডিপোর সিএফএস সুপারভাইজার মোহাম্মদ নাঈম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগুন রাসায়নিক ভর্তি কনটেইনারে ছড়িয়ে পড়ার কারণে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরিত একটি কনটেইনার উড়ে প্রায় ৩০০ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে। ’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হবে। ডিএনএ পরীক্ষার পর মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হবে।
সাতজন হেলিকপ্টারে ঢাকায়
অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে সাতজনকে হেলিকপ্টারে করে গতকাল বিকেলে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার দিকে চমেক হাসপাতালের সামনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান জানান, সংকটাপন্ন সাত রোগীকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। অন্য সাতজনকে আগেই এই বার্ন ইউনিটে আনা হয়।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, ১৪ জনেরই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। তাঁদের মধ্যে দুজনের ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ এবং অন্যদের ১৪ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁদের কেউ শঙ্কামুক্ত নন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ডা. সামন্ত লাল সেন ও তাঁর টিম আজ সকালের ফ্লাইটে চট্টগ্রামে এসে রোগীদের চিকিৎসার কাজ শুরু করবেন বলে জানা গেছে।
সরকারি সহায়তা
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান জানান, শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে দুই লাখ টাকার চেক দেওয়া হবে। গতকাল ১৩ জনের পরিবারকে এই চেক দেওয়া হয়। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে নিহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার এবং আহতদের ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।
কী বলছে মালিকপক্ষ
স্মার্ট গ্রুপের কর্ণধার ও আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমানের মালিকানাধীন এই কনটেইনার ডিপোতে প্রায় ১০ হাজার কনটেইনারের ধারণক্ষমতা আছে। ডিপোর জেনারেল ম্যানেজার নাজমুল আকতারের তথ্যানুযায়ী, শনিবার সেখানে প্রায় চার হাজার ৩০০টির মতো কনটেইনার ছিল। এর মধ্যে রপ্তানিযোগ্য কনটেইনার ছিল আট শতাধিক। আর চার শতাধিক ছিল আমদানি কনটেইনার। অগ্নিকাণ্ডের ফলে কী পরিমাণ কনটেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটা তিনি তাত্ক্ষণিকভাবে বলতে পারেননি।
বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিকপক্ষ এক বিবৃতিতে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ লাখ টাকা, যারা গুরুতর আহত হয়েছেন কিংবা অঙ্গহানির শিকার হয়েছেন তাঁদের ছয় লাখ টাকা করে এবং অপরাপর আহতদের চার লাখ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে, তবে নেভেনি
সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন গতকাল রাতে জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা আগুন নেভাতে কাজ করে যাচ্ছেন।