নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এই টিকা নেওয়ার পর বেশ কয়েকজনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার অভিযোগ উঠেছে। আর এ জন্য এই টিকার ব্যবহার আপাতত বন্ধ রেখেছে কয়েকটি দেশ। তবে এ টিকা নেওয়ার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার কোনো যোগসূত্র নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শুক্রবার এই টিকাদান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার জন্য সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কয়েক দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছে যে অক্সফোর্ডের টিকা গ্রহণ করার পর কারও কারও শরীরে রক্ত জমা বাঁধছে। কিন্তু অক্সফোর্ডের টিকা নিলে মানুষের শরীরের রক্ত জমা বাঁধবে- এমন কোনো আভাস মেলেনি।
বিবিসির খবর অনুসারে, ইউরোপে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ মানুষ অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকদের সহায়তায় তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩০ জনের শরীরে ভ্যাকসিন গ্রহণের পর রক্ত জমাট বেঁধেছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে। এর জেরে ডেনমার্ক, নরওয়ে ও আইসল্যান্ড ভ্যাকসিনটির ব্যবহার সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া, ইতালি এবং অস্ট্রিয়া বাড়তি সতর্কতা হিসেবে ভ্যাকসিনটির একটি নির্দিষ্ট ব্যাচের ডোজ প্রয়োগ বন্ধ রেখেছে।
এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন ব্যবহার স্থগিত করেছে থাইল্যান্ড। আজ শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নিজে ভ্যাকসিন গ্রহণের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শুরু করার কথা ছিল। তবে সেই পরিকল্পনা আপাতত বাতিল করা হয়েছে।
কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছেন। পরে বলেছেন, অক্সফোর্ডের টিকা রক্ত জমাট বাঁধার জন্য দায়ী বর্তমানে এমন কোনো প্রমাণ নেই। অক্সফোর্ডের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও এ ধরনের ঘটনা উল্লেখ করা হয়নি।
বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ পরামর্শক কমিটি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করছে। কিন্তু এখনই এ টিকা বন্ধ করার কোনো কারণ তারা দেখছেন না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘অক্সফোর্ডের টিকার ব্যবহার চালিয়ে যাওয়া উচিত। আমরা যা দেখব তা আমরা সব সময় দেখে থাকি-যেকোনো নিরাপত্তা সংকেত অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।’
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রশংসা করে মার্গারেট বলেন, এটি ‘চমৎকার টিকা’। টিকা দেওয়ার সঙ্গে বিদ্যমান স্বাস্থ্য সমস্যার কোনো কার্যকর সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি। টিকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিরতি দেওয়ার বিষয়টি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ।