রবিবার, অক্টোবর ১, ২০২৩
spot_img
Homeস্বাস্থকথাযে ৭টি লক্ষণ প্রকাশ করে আপনি মানসিকভাবে দূর্বল

যে ৭টি লক্ষণ প্রকাশ করে আপনি মানসিকভাবে দূর্বল

যে ৭টি লক্ষণ প্রকাশ করে আপনি মানসিকভাবে দূর্বল

“আমি কাউকে পরোয়া করি না” বা “আমি নিজেই নিজের সব কাজ করতে পারি, আমার কাউকে প্রয়োজন নাই” এ কথাগুলো আমরা হরহামেশাই হয়ত বলে থাকি। কিন্তু এর মানে কি এই যে আমরা অনেক শক্ত মনমানসিকতা ধারণ করি? না। আমাদের জোরালো কথার পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে ভয়। অনেক সময়ই হয়ত শুধু গলার জোড়ে নিজেকে শক্ত প্রমাণ করি আমরা। আসলে ভেতরে রয়েছে অনেক দূর্বলতা।
নিজেকে একজন দৃঢ় মানুষ হিসেবে সবার কাছে প্রতিপন্ন করা তাৎক্ষণিকভাবে বা স্বল্পসময়ের জন্য ফলপ্রসূ হতে পারে। কিন্তু সবসময় এর ফল ভাল হয় না। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ দৃঢ়তার মুখোশ পরে থাকেন তারা বরং অনেক বড় বিপদে পড়তে পারেন। সবসময় ‘আমি ঠিক আছি” বলা মানুষেরা ডাক্তারের কাছে যায় অনেক দেরিতে। ততোদিনে বড় কোন সমস্যা হয়ে যেতে পারে তার। নিজের সমস্যাগুলো চেপে রাখে, সাহায্যের প্রয়োজন হলেও প্রকাশ করে না, কিন্তু আবার নিজেও সামলে উঠতে পারে না। তখন হয় নানান রকম বিপত্তি।
তাই নিজের সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা জরুরী। আপনি যদি আসলেই দৃঢ় মানুষ হন তাহলে সেটি খুবই ভাল। কিন্তু মানসিক ভাবে দূর্বল যদি হন তাহলে নিজেকে চিনুন এবং নিজের ক্ষতির কারণ হওয়া থেকে বিরত থাকুন। জেনে নিন ৭টি চিহ্ন, যা বোঝায় আপনি সত্যিই দৃঢ় মনের কিনা!
যে ৭টি লক্ষণ প্রকাশ করে আপনি মানসিকভাবে দূর্বল-
১। আপনি অনিরাপত্তাবোধকে ঢাকার চেষ্টা করেন
‘আমি সবকিছু পারি’ বলে আপনি হয়ত নিজের আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করার চেষ্টা করছেন, নিজেকেও বুঝ দিচ্ছেন যে, আপনি পারবেন। আপনি যদি কাজটাতে দক্ষ না হন তাহলে কিন্তু আদতে আপনার ফলাফল আরও খারাপ হবে। সফল ব্যক্তিরা নিজেদের ত্রুটি জানেন। তারা সেগুলো শুধরে নিতে সচেষ্ট হন, আর এভাবেই আরও দক্ষ হয়ে ওঠেন।
 
২। আপনার কাছে ‘ব্যর্থতা’ বলতে কিছু নেই
কাজের ক্ষেত্রে হার থাকবে, জিত থাকবে, সফলতার সাথে থাকবে ব্যর্থতাও। আপনি বলছেন “ব্যর্থতার কোন সুযোগই নেই”। এই কথায় সুযোগটা বাস্তবেই উধাও হয়ে যাবে না। বরং এই মনস্তত্ত্ব আপনার মাঝে আরও চেষ্টা করার প্রবণতাকে রোধ করতে পারে। যেসব মানুষ দৃঢ়ভাব ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত থাকে তারা দেখাতে চায় যে তারা অনেক দক্ষ। পড়ে তারাই আবার বেশী ভেঙ্গে পড়ে। সফল মানুষেরা ব্যর্থতার সম্ভাবনাকে স্বীকার করেই তাদের পরিকল্পনা তৈরি করে। ফলে তা বেশি কার্যকর হয়।
৩। আপনার মূল্য নির্ভর করে অন্যেরা কিভাবে মূল্যায়ণ করছে তার উপর
যেসব মানুষেরা কঠিন হওয়ার অভিনয় করে তারা অন্যের কাছে নিজের ভাবমূর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে সারাক্ষণ। অন্যের মতামত, মূল্যায়ণকে ইতিবাচক করতেই শ্রম দেয় তারা। কিন্তু একজন প্রকৃত দৃঢ় মনের ব্যাক্তি যা করেন আত্মবিশ্বাসের সাথে করেন। নিজের ভেতর থেকে তারা শক্তি পান, নিজেকে প্রমাণের জন্য যাবতীয় কাজ করেন। প্রয়োজনে সাহায্য নেন এবং নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করে এগিয়ে যান।
৪। নিজের আবেগকে চেপে রাখেন
দৃঢ়তা নকলভাবে প্রকাশকারী মানুষেরা প্রায়ই যেটা করেন, তারা নিজের আবেগকে প্রকাশ করা থেকে বিরক্ত থাকেন। তারা একমাত্র যে আবেগটি প্রকাশ করেন তা হল, রাগ। দুঃখ, ভয়, উত্তেজনা এর সবকিছুই তারা চেপে রাখেন নিজের মধ্যে যতটা সম্ভব। প্রকৃত দৃঢ় ব্যাক্তিরা নিজের আবেগকে স্বীকার করেন। তারা ভয়ে ভীত হন না। নিজের আবেগ নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগেন না। বরং তা প্রকাশ করে সেই অবস্থান থেকে ভাল অবস্থায় যাওয়ার চেষ্টা করেন। বরং অযথা রাগ প্রকাশ থেকে বিরত থাকেন।
৫। আপনি নিজের কষ্টকে অস্বীকার করেন
দৃঢ়তাহীন মানুষেরা একা একা কষ্ট সহ্য করতে পারাকে বিশেষ কৃতিত্বের বিষয় মনে করেন। তারা নিজের শরীরকে যন্ত্রের মত খাটাতে পছন্দ করেন আর এভাবে নিজেকে শক্তিশালী মনে করেন। শারিরিকভাবে কোন সমস্যা হতে থাকলেও তারা সেটা এড়িয়ে যান। এটি অবশ্যই অনেক ক্ষতিকর। একজন শক্ত মনের মানুষ নিজের চিকিৎসা করাবেন, সুস্থ্য হবেন এবং দ্বীগুণ উদ্দীপনায় কাজ শুরু করবেন। এতে কাজও ভাল হবে আবার নিজেও সুস্থ থাকবেন।
৬। আপনি ভাবেন আপনি সব করতে পারেন
মানুষ চাইলেও সব করতে পারে না। এবং সব করতে না পারাটাই স্বাভাবিক। একজন দৃঢ় মনোবল সম্পন্ন ব্যাক্তি এটা মেনে নেন, খুঁজে বের করেন কি কি তার পক্ষে আসলেই করা সম্ভব। সেই কাজগুলো ভালভাবে করেন। কিন্তু নকলভাবে নিজেকে দৃঢ় প্রকাশ করতে চাওয়া ব্যাক্তি সব কাজই করতে চান এবং পড়ে সামলাতে পারেন না।
৭। অন্যদের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা
মনোবল দৃঢ় না থাকলে তা থাকতে একজন দূর্বল মানুষ অন্যের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা করেন। জোর করে নিজের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রকৃত মনোবল সম্পন্ন ব্যাক্তির নিয়ন্ত্রণ আরোপের প্রয়োজন নেই। তার ব্যক্তিত্বই তার চারপাশে প্রাভাব বিস্তার করে।
নিজেকে চেনা, নিজেকে গড়ে তোলার জন্য খুবই জরুরী। নিজের ভুলকে জানুন, স্বীকার করুন, শুধরে নিন। গুণকেও জানুন, প্রকাশ করুন, আত্মবিশ্বাসী হোন। এক সময় ভেতর থেকেই একজন মনোবল সম্পন্ন মানুষে পরিণত হবেন আপনি।
RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments