শুক্রবার, মার্চ ৩১, ২০২৩
spot_img
Homeলাইফ স্টাইলগাঢ় আর দীর্ঘস্থায়ী মেহেদির রঙ পেতে করণীয়

গাঢ় আর দীর্ঘস্থায়ী মেহেদির রঙ পেতে করণীয়

গাঢ় আর দীর্ঘস্থায়ী মেহেদির রঙ পেতে করণীয়

আমাদের কালচারে মেহেদি কত ইম্পরট্যান্ট, তা বোঝা যায় এই ঈদের আর বিয়ের মৌসুমে। আর মেহেদির রঙ কতটা গাঢ় হল তা নিয়েও আছে নানা সংস্কার, কৌতুক! মেহেদি দেয়া খুবই ধৈর্য্যের এক শিল্প। আর আজকাল মেহেদি আর্টিস্টদের কাছ থেকে নজরকাড়া ডিজাইনের জন্য সবাই কম অর্থ ব্যয় করেন না! কিন্তু, এত শখের মেহেদিতে যদি ঠিক মত রঙ না হয় তবে?? পুরো সময়, টাকা সবই যায় জলে। সুতরাং, ঈদ আর বিয়ের মৌসুমের আগে আগেই আপনাদের জানিয়ে দেই ন্যাচারাল মেহেদি (যা কিনা বেশিরভাগ মেহেদি আর্টিস্টরাই ব্যবহার করতে ভালোবাসেন!) তার রঙ আরও লাল, গাঢ় আর দীর্ঘস্থায়ী কীভাবে করবেন।

গাঢ় আর দীর্ঘস্থায়ী মেহেদির রঙ পেতে করণীয়-

কিছু প্রয়োজনীয় কথা –

  • প্রথমে আপনার পছন্দের ডিজাইন সিলেক্ট করুন। আর্টিস্টের কাছে গেলেও তাকে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলুন, আপনি বিশেষ দিনটির জন্য কী চাচ্ছেন। ছবির মাধ্যমেও বুঝাতে পারেন। কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়ে গেলে আর্টিস্ট যত সুন্দর করেই কাজ করুক না কেন আপনার পছন্দ নাও হতে পারে।
  • চেষ্টা করুন ন্যাচারাল মেহেদি ব্যবহার করতে। এখন প্রায় সব আর্টিস্ট নিজের হাতে বানানো মেহেদি কোন ইউজ করে আবার বিক্রিও করে। বাজারে খুঁজে না পেলে তাদের কাছ থেকে কিনতে পারেন।
  • এক ঢিলে দুই পাখি মারার আশায় গোল্ড, একটিভ নামক কেমিকেলের ডিব্বা ব্যবহার করলে নিজের রিস্কে করবেন। কিন্তু খবরদার নিজের বাচ্চার হাতে ঈদের আগের রাতে এগুলো দেবেন না যেন!

হাত রাঙানোর আগে-

  • হাতের আর পায়ের যে অংশে মেহেদি দেবেন তা ভালো ভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। সাবান দিয়ে না ধুলে স্কিনে রঙ বসে না।
  • একটা পুরনো কাপড় (কোথাও ভুল হয়ে গেলে তাড়াতাড়ি মোছার জন্য), একটা সুঁই (কোনের নজেল বন্ধ হয়ে গেলে পরিষ্কারের জন্য) আগে থেকে কাছে নিয়ে বসুন।
  • মেহেদি দেবার ঠিক আগে আগে ওয়াক্সিং, ম্যানিকিওর, পেডিকিওর করাবেন না। দেখা গেছে, এসবের ঠিক পর পর মেহেদি দিলে রঙটা পানশে বাদামি হয়ে যায়।
  • বেশ ভালো আলো আছে এমন জায়গায় বসুন। এতে ভুল কম হবে। আর আর্টিস্টের কাছে দিলে বারবার নড়াচড়া করবেন না। এতে ডিজাইন নষ্ট হয় আর্টিস্টও বিরক্ত হয়! (ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা)
  • মেহেদির মধ্যে কচি পেয়ারা পাতা, লেবুর রস, চা ইত্যাদি ব্যবহার করলে রঙ অনেক গাঢ় হয় কারণ এগুলো মেহেদির কালারিং প্রপার্টি একটিভেট করে। নিজে বানালে একটু করে মিশিয়ে নিতে পারেন। আর্টিস্টকেও বলতে পারেন যাতে এগুলো ব্যবহার করে।

গাঢ়, লাল রাঙ্গা হাতের জন্য-

  • গাঢ় রঙ পেতে চাইলে অবশ্যই বিশেষ দিনের অন্তত ২৪ ঘণ্টা বা ১ দিন আগে হাতে মেহেদি দেবেন। ভালো ন্যাচারাল মেহেদির আসল রঙ ২৪ ঘণ্টা পর দেখা যায়।
  • ন্যাচারাল মেহেদি হাতে যতক্ষণ রাখতে পারেন তত ভালো। আমি ছোট বেলা থেকে হাতে মেহেদি দিয়ে ঘুমাতে যাই। মিনিমাম ৬ ঘণ্টা মেহেদি হাতে রাখতে হবে।
  • মেহেদি শুকানোর পর উঠানোর জন্য পানি দিয়ে ধোবেন না যেন!! অন্তত ১২ ঘণ্টা মেহেদি দেয়া জায়গায় পানি লাগাবেন না। নরমাল তেল, বা আচারের তেল দিয়ে মেহেদি উঠাবেন। ধুয়ে ফেললে রঙ ২-৩ শেড হালকা হয়ে যায়।
  • এটা আমার দাদির কাছ থেকে শোনা, একটা প্যানে কয়েকটা লবঙ্গ দিন, এবার ধোঁয়া বেরনো শুরু করলে এর উপরে দুই হাতের তালু ধরে রাখুন। ১০ সেকেন্ড পর হাত সরিয়ে নিন। (ট্রাই করতে চাইলে সাবধানে করবেন)
  • একটু লেবুর রসে চিনি মেশান, মেহেদি শুকানোর পর উঠে গেলে হাতে এই মিশ্রণ লাগান।
  • অতিরিক্ত লেবু-চিনি দিয়ে ঘষাঘষি শুরু করবেন না যেন! এতে পানি দিয়ে ধুলে যা হয় তাই হবে, ডিজাইন হালকা হয়ে নষ্ট হয়ে যাবে। কয়েক ফোঁটাই যথেষ্ট।

আশা করি টিপসগুলো উৎসবের দিনে কাজে লাগবে। আগে সবাই এই ট্রিক গুলো জানত, কিন্তু এখন কেমিকেল মেহেদির যুগে আস্তে আস্তে এর চল উঠেই যাচ্ছে। মনে রাখবেন, ন্যাচারাল উপায় যত সময়সাপেক্ষ হোক না কেন, সবসময়ই সম্পূর্ণ নিরাপদ। বড়, বাচ্চা সবার জন্য। নিশ্চয়ই আপনি চান না মেহেদির মত আমাদের সংস্কৃতির এত সুন্দর একটা অংশের অপব্যবহার করে বিশেষ দিনটিকে নষ্ট করতে!

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments

ABUL HOSAIN on BMTF Job Circular 2022