প্রচ্ছদ

অস্ট্রেলিয়ায় সীমান্ত খুলল ১৯ মাস পর

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: ছেলের সঙ্গে শেষ দেখা হয়েছিল বছর খানেকেরও বেশি আগে। প্রায় ৬০০ দিন পেরিয়ে আজ সিডনি বিমানবন্দরে যখন ছেলের মুখটা প্রথম নজরে এল টিম টার্নারের তখন আর চোখের জল বাঁধ মানেনি বৃদ্ধের। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘‘গত দেড় বছরে একটা করে দিন কাটিয়েছি আর ভেবেছি, কবে আবার তোমার মুখ দেখতে পারব, আদৌ পারব কি…’’

সিডনির এই ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। সোমবার অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর দেশের একাধিক বিমানবন্দরে দেখা গেল পুনর্মিলনের এমন হাজারো খণ্ডচিত্র। গত বছরের মার্চ মাস থেকে প্রায় ৬০০ দিন কড়া প্রহরায় সরকার আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ রাখায় অস্ট্রেলিয়ার বাইরে পা রাখার অনুমতি ছিল না বাসিন্দাদের।

বাইরে থেকে সে দেশে পা রাখার অনুমতি পাওয়াও ছিল কঠিন। যদি কোনও ভাবে তা পাওয়াও যেত খরচের পরিমাণ ছিল বিপুল। হোটেলে কমপক্ষে ১৪ দিন নিভৃতবাসে কাটানোর ফরমান ছিল দোসর। ফলে ইচ্ছে থাকলেও এই ১৯ মাস অন্য মহাদেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তবে এ দিন থেকে নিভৃতবাসের সেই নিয়মও তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার দুই বড় শহর সিডনি এবং মেলবোর্ন।

ফেরার রাস্তা সুগম হতেই সময় নষ্ট না করে দলে দলে দেশে ফিরছেন বাসিন্দারা। বিশেষত তারা, যাদের ফেরার কারণ গুরুতর হওয়া সত্ত্বেও ফিরতে পারেননি এতদিন। ঠিক যেমন মায়ের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর পেয়েও ব্রিটেন থেকে উড়ে আসতে পারেননি জুলি চু। আজ ফেরার বিমানে উঠে জুলির উচ্ছ্বসিত মন্তব্য, ‘‘কতক্ষণে মায়ের হাতটা চেপে ধরব! আর অপেক্ষা করতে পারছি না!’’

নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার পর থেকে অস্ট্রেলিয়ার বাইরে যাওয়ার ঢলও চোখে পড়ার মতো। লস অ্যাঞ্জেলেসের বিমানে ওঠার আগে বছর ৩৫-এর যুবক অভি বাজাজ যেমন বললেন, ‘‘কতদিন ধরে এই দিনটারই অপেক্ষায় ছিলাম। বড়দিন পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারব সেটা ভেবেই ভাল লাগছে।’’

‘রেডি ফর টেক-অফ!’— করোনার জেরে জারি হওয়া সীমান্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের এই পদক্ষেপের খবরটি ফেসবুকে এ দিন এ ভাবেই ভাগ করে নিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। এই সূত্রে পর্যটনও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তবে নাগরিকদের জন্য নিয়ম শিথিল হলেও এখনও কড়া বিধিনিষেধের প্যাঁচে পড়ে অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমানে আটকে রয়েছেন কমপক্ষে ১০ লক্ষ বিদেশি। তাদের জন্য কোনও সুরাহার চিন্তাভাবনা হচ্ছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

টানা ১৮ মাস পর্যটনে রাশ টানার পর এ দিন পর্যটকদের ধূমকেতু শুনিয়েছে থাইল্যান্ডও। প্রায় ৬০টি ‘কম ঝুঁকির’ দেশের একটি তালিকা বার করেছে তারা। প্রতিষেধকের সম্পূর্ণ ডোজ় নেওয়া থাকলে সেখান থেকে আসা পর্যটকদের আর বাধ্যতামূলক ভাবে নিভৃতবাসে থাকতে হবে না। ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ভারত থেকে আসা পর্যটকদেরও।

আরো পড়ুন:

চীন পরমাণু সমঝোতা নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *